৫০ বছরের ওকালতির জীবনে এমন ঘটনার সম্মুখিন হয়নি

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৮, ২০১৭, ০২:৩১ পিএম

ঢাকা: চট্টগ্রামের এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর জামিন প্রসঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারকে কোর্টে আটকিয়ে রাখার ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) সুপ্রিমকোর্ট ল’ রিপোর্টার্স ফোরামে এক সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাসেত মজুমদার এ প্রতিবাদ জানান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি আজ আপনাদের সামনে অত্যন্ত দুখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমার  দীর্ঘ ৫০ বছরের ওকালতি জীবনে এইরকম ঘটনা আমাকে আগে কখনো সম্মুখীন হতে হয় নাই।

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গত ৬ জুন এনেক্স কোর্ট ৭ এ আগাম জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা বিভিন্ন পত্রিকায় বিকৃতভাবে প্রকাশ করায় আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ওই দিনের ঘটনা উল্লেখ করে বাসেত মজুমদার বলেন, জৈনিক জুনিয়র আইনজীবী রেজাউল করিম আমাকে একটি আগাম জামিন শুনানির জন্য অত্যন্ত পীড়া-পীড়ি করে, শেষ পযর্ন্ত  তার অনুরোধে এই মামলাটি শুনানি করি। আসামির বিরুদ্ধে ৩২৬/৩০৭ ধারাসহ অন্যান্য ধারায় অপরাধ ছিল। বিজ্ঞ বিচারপতি মো. মিফতা উদ্দিন চৌধুরী এবং বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহ শুনানীকালে বলেন, অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর, তাকে আগাম জামিন দেব না, তাকে জেলে পাঠিয়ে দিব এবং পুলিশকে বললেন ব্যবস্থা করার জন্য। আমি মক্কেলের পক্ষে বিনয়ের সাথে আবেদন করলাম যে, দয়া করে এই রোজার মাসে তাকে ক্ষমা করে দেন। এ সময় কোর্টের সাথে কিছু কথাবার্তা হয়। এক পর্যায়ে কোর্টের কথাবার্তা আমার নিকট প্রতিয়মান হইল যে, কোর্ট বোধহয় তাকে ক্ষমা করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে কিছুদিন হইতে আমি অনুভব করিতেছি যে, আমার কথা শুনিতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তাই কোর্ট হইতে বাহির হওয়ার সময় পুলিশের জিজ্ঞাসায় আমি বলিয়াছি, মনে হয় কোর্ট বিষয়টি ক্ষমা করে দিয়েছেন। এই বলিয়া আমি অন্য কোর্টে চলিয়া গেলাম। পরবর্তীতে আমাকে সংবাদ দিল কোর্টে আসার জন্য, সেমতে কোর্টে আসিলে বিচারক আমাকে বলেন, আমি তো ওকে ছাড়ি নাই। আপনি তাকে ছাড়তে বললেন কেন? আমি বললাম যা-হোক বোধহয় আমার হয়তো শুনিতে অসুবিধা হয়েছে।

এ পর্যায়ে বিচারক আমাকে আদেশ দিলেন জুনিয়রকে নিয়ে আসার জন্য। পরবর্তীতে জুনিয়র কে খবর দিয়ে নিয়ে আসলাম এবং বিচারক তাহাকে আদেশ দিল মক্কেলকে নিয়ে আসার জন্য এবং জুনিয়র কিছুক্ষণপরে মক্কেলকে নিয়া আসলেন এবং মাননীয় আদালত আসামিকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলেন। উপরের বর্ণিত ঘটনা বিকৃতভাবে পত্র-পত্রিকায় উপস্থাপন করার জন্য আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি।

এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি , আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়নসহ আইনজীবী বাসেত মজুমদারের জুনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য গত ৬ জুন আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর আদালত পুলিশকে বিভ্রান্ত করে ছাড়িয়ে নেয়ায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারকে এজলাশ কক্ষে আটকে থাকতে হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। পরে আসামিকে ডেকে এনে পুনরায় পুলিশের জিম্মায় দিলে ছাড়া পান বাসেত মুজুমদার। এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই