হলি আর্টিজান মামলা এক মাসের মধ্যে অভিযোগপত্র

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০১৮, ০১:৩১ পিএম

ঢাকা : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) মাস খানেকের মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাড়াহুড়ো করে একটা জিনিসকে নষ্ট করার চেয়ে একটু সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় অকাট্য যুক্তিসহকারে একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে ঈদ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা মামলাটি একেবারেই শেষ প্রান্তে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এক মাসের মধ্যেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ মামলার তদন্তে কোথাও বাধাগ্রস্ত হতে হয়নি। সবার সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া গেছে। হলি আর্টিজানে যারা অভিযান করেছে এর পেছনে কারা রয়েছে, কারা মদত দিয়েছে, ঘরভাড়া দিয়েছে, কারা অস্ত্র দিয়েছে তাদের ইতোমধ্যেই আমরা শনাক্ত করেছি। এর মধ্যে এনকাউন্টারে কেউ মারা গেছে। বাকি যারা আছে তাদের উপযুক্ত শাস্তির বিধান করার জন্য অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা প্রয়োজন, যা একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী জঙ্গিরা হামলা চালায়। প্রতিরোধ করতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় ডিবির এসি রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন খান নিহত হন। রাতে দেশি-বিদেশি ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও রেস্তোরাঁর এক কর্মী নিহত হন।

নগরবাসীসহ সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশপ্রধান বলেন, আমাদের সমন্বিত নিরাপত্তার জন্য রমজানের এই ২৬ দিনে ঢাকা মহানগরীতে উল্লেখযোগ্য কোনো অপরাধ ঘটেনি। ঈদকে সামনে রেখে যেসব অপরাধ হয়ে থাকে তা আমরা সবাইকে নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছি।  

তিনি বলেন, মানুষ নিরাপদে গভীর রাত পর্যন্ত শপিং মলে ঈদ কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছে। অজ্ঞান পার্টি, পকেটমার, চাঁদাবাজ ও টিকেট কালোবাজারিদের বরদাস্ত করব না। শুধু বাস টার্মিনাল নয়, আমরা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশনে নিয়েছি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা শহরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হবে না। যেই চাঁদাবাজি করবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঈদে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যাত্রী হয়রানিমূলক কোনো আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। ঢাকা শহরের প্রবেশ ও বাহির পথ যানজটমুক্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো রকম লক্কড়-ঝক্কড় বাস রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না। লক্কড়-ঝক্কড় বাস রাস্তায় নামলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাস ডাম্পিং করা হবে।  

পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা মাদক খাবেন না। নেশাগ্রস্ত হয়ে নিজের সঙ্গে যাত্রীদেরও বিপদে ফেলবেন না। জঙ্গির পর মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। যত দিন ঢাকা মহানগরে মাদক থাকবে তত দিন আমাদের অভিযান চলবে। মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। আনন্দমুখর ও নিরাপদ ঈদযাত্রার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই