প্রার্থিতা ফিরে না পেলে যেতে পারবেন আদালতে

৫৪৩ আপিলের শুনানি শুরু আজ

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০১৮, ১১:৫২ এএম

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বাতিল ঘোষিত হওয়া ৭৬৫ জনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছেন ৫৪৩ জন। আর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আপিল করেননি ২৪৩ প্রার্থী।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) শেষ দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটিসহ মোট জমা পড়ে ২২২টি আপিল আবেদন। ইসিতে জমা পড়া এসব আপিল আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে শুনানি। আর শুনানি শেষেই ঘোষিত হবে রায়। ইসির রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতেও আপিলের সুযোগ থাকছে প্রার্থীদের। আর সেই সুযোগ দিতেই ইসির রায়ের সার্টিফাইড কপিও দেওয়া হবে আপিল আবেদনকারীদের।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সারা দেশে দলীয় ও স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়নপ্রত্র জমা দেন ৩ হাজার ৬৫ জন। আর ২ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন কারণে অযোগ্য বিবেচনায় বাতিল করা হয় ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়ন বাতিল করার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে আপিলের সুযোগ দেয় ইসি। টানা তিন দিন আপিলের এই সুযোগ শেষ হয়েছে গতকাল বুধবার বিকাল ৫টায়। বাতিল হাওয়া মনোনয়নপ্রত্যাশী ৭৮৪ জনের মধ্যে প্রার্থিতার বৈধতা পেতে গত তিন দিনে আপিল করেছেন মোট ৫৪৩ জন।

এদিকে এই আপিলের বাইরে ঢাকা-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন জানিয়ে রিট করেছেন তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোট প্রার্থী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে এমন আবেদন জমা পড়েছে মোট তিনটি।

আপিল আবেদনের শেষ দিন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে তার তিন আইনজীবী তিনটি সংসদীয় আসনের বিপরীতে আপিল করেন ইসির সংশ্লিষ্ট বুথে।

আপিল আবেদনের প্রথম দিন গত ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা পড়ে ৮৪টি আপিল, দ্বিতীয় দিন ২৩৭ প্রার্থী আপিল আবেদন করেন, তাদের মধ্যে একজন তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। গতকাল বুধবার শেষ দিন মোট আপিল জমা পড়েছে ২২২টি।

ক্রমিক নম্বর অনুসারে বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে ৮ ডিসেম্বর শনিবার পর্যন্ত চলবে আপিল আবেদনের ওপর শুনানি। নির্বাচন ভবনের লিফটের ১০ তলায় এজন্য এজলাস তৈরি করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে এবং বাকি কমিশনাররা সদস্য হিসেবে শুনানি গ্রহণ করবেন। আজ বৃহস্পতিবার আপিল আবেদনের ক্রমিক নম্বর ১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত প্রার্থীদের শুনানি করা হবে। আগামীকাল শুক্রবার ১৬১ থেকে ৩১০ পর্যন্ত এবং ৮ ডিসেম্বর শনিবার ৩১১ ক্রমিক নম্বর থেকে ৫৪৩ পর্যন্ত আবেদনের আপিল শুনানি গ্রহণ করবে কমিশন।

ইসি সচিব জানিয়েছে, প্রতিটি আবেদনের আপিল শুনানি শেষে সঙ্গে সঙ্গেই রায় জানিয়ে দেওয়া হবে। রায়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি উচ্চ আদালতে কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান, তাহলে তাকে রায়ের নকল কপি দিয়ে দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, আপিল আবেদনের শুরুতেই ৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতার বৈধতার দাবিতে আপিল করেন হেভিওয়েট খ্যাত অর্ধ ডজনেরও বেশি প্রার্থী। এদিন আপিল করেন বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রাম-৫ আসনের মীর নাসির উদ্দিন, গণফোরামের হয়ে প্রার্থী হওয়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া ছাড়াও সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া পটুখালী-৩ আসনের গোলাম মাওলা রনি, খাগড়াছড়ির আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের বিএনপির সাবেক এমপি মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন, সিলেট-৩ আসনে কাইয়ুম চৌধুরী, বিএনপির প্রার্থী শূন্য হওয়া বগুড়া-৭ আসনের খোরশেদ মিলটন ও ঢাকা-১ আসনের খন্দকার আবু আশফাক মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এদিন মনোনয়ন বাতিল হওয়া আলোচিত ফেসবুক সেলিব্রেটি হিরো আলমও প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেন।

৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দিনে আপিল করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। আর পটুয়াখালী-১ আসনে জাতীয় পার্টির সদ্য মহাসচিব পদ হারানো নেতা রুহুল আমিন হাওলাদার ও বরিশাল-২ আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্রনায়ক সোহেল রানাও প্রার্থিতা বৈধতার দাবিতে আপিল করেছেন। এ ছাড়া নেত্রকোনা-১ আসনের এমএ করিম আব্বাসী, মেজর (অব.) মনজুর কাদের, গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান এইচ সরকারও দ্বিতীয় দিন আপিল আবেদন করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই