রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে বিক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দিয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ নিয়ে ‘অসন্তোষজনক ও অবমাননাকর’ মন্তব্য করেন। বিষয়টি দ্রুত ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তকে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।
পরবর্তীতে ঘটনার কিছু ভিডিও ও স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নিজেই তার ফেসবুক আইডি থেকে সংশ্লিষ্ট ভিডিও প্রকাশ করেন। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
দিবাগত রাত ১টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ওই শিক্ষার্থীর বাসার সামনে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে উত্তেজিত জনতা পুলিশি প্রহরার মধ্যেই তাকে মারধর করে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি শান্ত করি। আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপ, ফেসবুক পোস্ট এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ধর্মীয় ইস্যুতে উত্তেজনা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক হলেও আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিচার করার প্রবণতা সমাজে বিচারহীনতা ও সহিংসতা উসকে দিতে পারে। তাই সকল পক্ষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এম