হুমায়ূনের লেখায় বিতর্কে সাবেক মন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর আদেশে নববধূ ধর্ষণ কাণ্ডে রেহাই পান মোজাম্মেল

  • সোনালী ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম
ফাইল ছবি

বিখ্যাত নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা দেয়াল উপন্যাসের একটি অংশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দালিলিক প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালে উপন্যাসটির কয়েকটি পৃষ্ঠা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি জানান, উপন্যাসটিতে ১৯৭২ সালে টঙ্গীতে সংঘটিত এক নবদম্পতি হত্যাকাণ্ড ও নববধূ ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা রয়েছে, যেখানে সরাসরি সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নাম উঠে এসেছে।

উপন্যাসে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা মোজাম্মেল হক দলবলসহ এক নবদম্পতির গাড়ি আটক করেন। সেখানে নববধূর স্বামী ও গাড়িচালককে হত্যা করা হয়, আর নববধূকে ধর্ষণের পর লাশ ফেলা হয় টঙ্গী ব্রিজের নিচে।

ঘটনাটি আলোচনায় এলে সেনাবাহিনীর মেজর নাসের মোজাম্মেলকে আটক করেন। পরবর্তী সময়ে মোজাম্মেলের পরিবারের সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং নেতার হস্তক্ষেপ চান।

উপন্যাসে বর্ণনা অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু তাদের আবেদন শুনে তাৎক্ষণিকভাবে মোজাম্মেলকে মুক্তি এবং মেজর নাসেরকে টঙ্গী থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, হুমায়ূন আহমেদের এই সাহিত্যকর্ম ঐ সময়কার রাজনৈতিক বাস্তবতা ও অপরাধের চিত্র তুলে ধরে, যা প্রমাণ হিসেবে বিবেচনার যোগ্য। তিনি উপন্যাসের পৃষ্ঠা উদ্ধৃত করে ট্রাইব্যুনালে পাঠ উপস্থাপন করেন।

তবে আ ক ম মোজাম্মেল হকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০১৩ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের দেয়াল উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমি ও নৈতিক সংকটের বর্ণনায় ব্যাপক আলোচিত হয়। এবার সেই সাহিত্যকর্মের অংশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যধারায় ব্যবহৃত হওয়ায় বিষয়টি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

আইনজীবীরা বলছেন, কোনো সাহিত্যকর্ম দালিলিক প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন বিরল ঘটনা, যা আদালতের আলোচনাকে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

এসএইচ