তুরাগ থেকে লাশ উদ্ধার: স্ত্রীর দিকে কু-নজর দেয়ায় হত্যা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৩, ০৭:১৬ পিএম

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তুরাগ নদী থেকে লেগুনার লাইনম্যান নবী হোসেনের (৩২) গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ডিএমপি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, নবী হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এরপর লাশ তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।  এই ঘটনায় নিহতের ভাই অপহরণ, হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার তদন্তে নেমে হত্যায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। হত্যা জড়িত মো. মাহিকে কেরাণীগঞ্জ, দীপুকে বসিলা, মো. কবিরকে মিরপুর পল্লবী ও মো. ইমরানকে সিলেটের ওসমানী নগরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে নবী হোসেন হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

তিনি বলেন, নিহত নবী হোসেন মোহাম্মদপুরের বেড়িবাধে চলাচল করা লেগুনার লাইনম্যান ছিলো। একই এলাকার কবিরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। তবে লেগুনার চাঁদা ও নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে কবিরের স্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও কু-নজর দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কবির। পরবর্তীতে কবিরের পরিকল্পনায় চূড়ান্ত হয় নবীকে হত্যার সিদ্ধান্ত। গত ৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা হাউিজংয়ের চল্লিশ ফিট রোডের শেষ মাথায় তুরাগ নদীর পাড়ে আসামিরা নবীকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে ১০ টি ঘুমের ওষুধ মদের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে আসে। 
নদীর পাড়ে ওয়াক ওয়েতে বসে নূরনবীকে মদ পান করায়। মদ পান করার কিছুক্ষণ পর নূরনবী অচেতন হয়ে পড়লে ঘাতকরা ওয়াক ওয়ের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে প্রধান আসামি কবির নিহত নূরনবীর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। একপর্যায়ে আসামী ইমরান সঙ্গে আনা ধারালো ছুরি দিয়ে নূরনবীর গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে কবির লাশটি তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

ডিসি আজিমুল হক বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনার ৩ দিন পর নিহতের বড় ভাই একটি মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে পুলিশ। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করতে বসিলা ও এর আশপাশের এলাকার দুই শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকরীদের শনাক্ত করা হয়।

আসামিরা ঘটনার পর থেকে রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলা দায়েরে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি বলেন, হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর দিকে আপত্তিকর মন্তব্য কু নজর দেওয়ায় নবী হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে এর বাইরেও কোনো বিষয় আছে কি না সেটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ