নদীতে বস্তা ভর্তি ২০ টন পেঁয়াজ!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০২:২৬ পিএম

ঢাকা : বেশি লাভের আশায় গুদামজাত করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ পচে যাওয়ার কারণে কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত তিনদিন ধরে খাতুনগঞ্জের পাশে কর্ণফুলী নদীর সংলগ্ন চাকতাই খালে এসব পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে। খালের পাড়ে এখন বিপুল পরিমাণ পচা পেঁয়াজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন মিয়ানমারের ১২-১৫ জন ব্যবসায়ী। আমদানিকারকদের সঙ্গে কারসাজি করে খাতুনগঞ্জে যেসব কমিশন এজেন্ট ও আড়তদার পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে তারা তা বেশি দামে বিক্রি করতে কমিশন এজেন্টদের বাধ্য করছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানার পর থেকে প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। এখন প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২০০-২৫০ টাকা। অস্বাভাবিকভাবে দাম বৃদ্ধির জন্য পেঁয়াজের সরবরাহ ঘাটতির কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আড়তে বিপুল পেঁয়াজ সংগ্রহে রেখে বেশি দামে বিক্রির আশায় হয়েছে গুঁড়েবালি।

খাতুনগঞ্জের কয়েকটি আড়তে পচে যাওয়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ ফেলে দেওয়া হচ্ছে নদীতে-ভাগাড়ে।  শুক্রবার সন্ধ্যার পর নগরের ফিরিঙ্গি বাজার ব্রীজঘাট এলাকায় ১০-১৫ বস্তা পচা পেঁয়াজ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে খাতুনগঞ্জে সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড় থেকে প্রায় ২০ টন পচা পেঁয়াজ সরিয়েছে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) খাতুনগঞ্জে কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, বস্তাভর্তি পেঁয়াজ পচে মাটিতে পড়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। শ্রমিকরা এসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে নিয়ে ফেলছেন।

জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসতে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় গরমে পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। যেগুলো ভালো থাকছে সেগুলোরও মান কমে যাচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা লোকসানে পড়ছেন।

খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংয়ের মালিক আবুল বশর বলেন, খাতুনগঞ্জে ১৫ থেকে ২০টি পেঁয়াজের আড়ত আছে। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ এখানে আসতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যায়। এরপর আড়তে রাখা পেঁয়াজ দ্রুত পচে যাচ্ছে। প্রতিটি আড়তে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ বস্তা করে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কর্ণফুলী ব্রীজ ঘাট এলাকার স্থানীয়রা জানান, খাতুনগঞ্জ থেকে বস্তাভর্তি পচা পেয়াজ কম দামে কিনে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নদীর পাড়ে শুকাতে দেন। এরপর অধিকাংশ নষ্ট পেঁয়াজ সেখানে ফেলে দেওয়া হয়।

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর ৬৬ হাজার ১৬২ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (এলসি) খোলা হলেও এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসেছে ছয় হাজার টনের মতো।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম জানান, ‘রাতে খাতুনগঞ্জের ময়লার ভাগাড়ে বস্তায় বস্তায় পচা পেঁয়াজ ফেলে যাচ্ছে খাতুনগঞ্জের শ্রমিকরা। কর্ণফুলী নদীর পাড়েও পচা পেঁয়াজ ফেলে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ টন ধারণক্ষমতার চারটি গাড়ি দিয়ে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই