অবশেষে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতা কমতে শুরু করেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২০, ১১:২৭ এএম

ঢাকা: অবশেষে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতার চাপ কমতে শুরু করেছে। বুধবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে মানুষের কম উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

সম্ভাব্য লকডাউন আতঙ্কে গত কয়েকদিন ধরে চাহিদার কয়েকগুণ বেশি চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, চিনি, শিশুখাদ্যসহ ডায়াপার ও জীবাণুনাশক কিনছিলেন সাধারণ মানুষ। এর প্রভাব পড়ে রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে। এই সুযোগে জিনিসপত্রের বাড়তি দাম নেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

যদিও কোনও নিত্যপণ্যের সংকট নেই, পণ্য সাপ্লাইচেইন সিস্টেমও সন্তোষজনক জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত হয়ে নিত্যপণ্য বেশি পরিমাণে না কেনার আহ্বান জানানো হয়। তবে এতেও কাজ হয়নি।

বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যাশা অনুযায়ী ক্রেতা না থাকায় নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে আর বাড়েনি। তবে আগের বাড়তি দাম এখনও বহাল রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহল্লার ওষুধের দোকান, খাবারের দোকান খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে সবজির বাজার, মাছের বাজারসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান। সবজি ও মাছের বাজার চড়া থাকলেও চাহিদা কমে যাওয়ায় ও সরবরাহ প্রচুর হওয়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম।

একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। করোনার কারণে লকডাউন আতঙ্কে এই নিত্যপণ্যটির দাম উঠেছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

তবে চালের দাম এখনও বাড়তি রয়েছে। অপ্রতুল সরবরাহের দোহাই দিয়ে বাড়ানো হয়েছে দেশের প্রধান এই খাদ্যপণ্যের দাম। তবে দোকানপাট বন্ধ থাকবে জেনে শ্রমিকদের বেশিরভাগই গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। এ কারণে কিছুটা পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। দাম বাড়াতে এ সুযোগও কাজে লাগানো হয়েছে।

তবে সরকার সংশ্লিষ্টরা বারবার বলছেন, এবার এমন হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। বাজারে পণ্য সরবরাহের পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। প্রয়োজনে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টিসিবিকে কাজে লাগানো হবে, সেভাবে প্রস্তুতিও রয়েছে।

রাজধানীর পাইকারি বাজার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা বলেন, ‘পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা এখনও ভালো রয়েছে। কোনও ধরনের পণ্য সংকটের সম্ভাবনা নেই।’ তাই পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ারও কোনও কারণ নেই বলে মন্তব্য করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘কোনও পণ্যের দাম বাড়বে না। করোনার প্রভাবে বাজারে কোনও পণ্য সংকটের সুযোগ নেই। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে মাল সরবরাহ করছি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন, এই মুহূর্তে বাজারে কোনও পণ্যের সংকট নেই। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে টিসিবির মাধ্যমে রোজার জন্য আনা পণ্যগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভোক্তাদের প্রতি এখনও অনুরোধ করছি, কোনোভাবেই আতঙ্কিত হয়ে বাড়তি পণ্য কিনে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করবেন না।’

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ রাজধানীর ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট দিতে এসে অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বাজারের ওপর চাপ সৃষ্টি না করতে ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে আমাদের যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে এক বছরের খাদ্য আমরা কিনতে পারবো।’

অপরদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভোক্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রয়োজের বেশি পণ্য কিনে বাজার অস্থির করবেন না। দেশে কোনও পণ্যের সংকট নেই। পণ্য সরবরাহ সিস্টেমেও কোনও জটিলতা হয়নি, হবেও না।

সোনালীনিউজ/এইচএন