দীর্ঘ ১০ বছর পর গতি ফিরেছে পুঁজিবাজারে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০, ০৪:৩৩ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: অবশেষে দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে সুদিন ফিরেছে। টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এর ফলে তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেনেও গতি বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গড়ে হাজার কোটি টাকার ওপর লেনদেন হচ্ছে এক মাসের বেশি সময় ধরে। এর ফলে পুঁজি হারানোর আতঙ্ক ভুলে মুনাফা তুলে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। 

যে কারণে নতুন স্বপ্ন নিয়ে বাজারে ছুটে আসছেন তারা। সূচক, লেনদেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা— সবকিছু মিলে ফুরফুরে অবস্থায় রয়েছে পুঁজিবাজার। ২০১০ সালের মহাধসের পর এত ভালো অবস্থা আগে কখনও দেখা যায়নি।

এ অবস্থায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারে সু শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছে। এরই সুফল পুঁজিবাজারে দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা ধরে রাখাই এখন পুজিবাজারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

তারা বলছেন, ২০১০ সালের ধসের পর পুঁজিবাজার বেশ কয়েকবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বল নেতৃত্ব এবং একের পর এক দুর্বল কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আসায় বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিলেও তা স্থায়ী হয়নি।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভিন্ন। নতুন কমিশন বেশকিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও বাতিল করে দিয়েছে। অনিয়মের কারণে বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে। ফলে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই ভূমিকা ধরে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দুর্বল কোম্পানি বাদ দিয়ে বাজারে ভালো ভালো কোম্পানি আনতে হবে। তাহলে বাজারের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা ধরে রাখা যাবে।

উক্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাজারে মহামারি করোনাভাইরাস আতঙ্কে গত মার্চে বড় ধরনের ধস নামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় টানা ৬৬ দিন বন্ধ রাখা হয় পুঁজিবাজারের লেনদেন। এর মধ্যেই বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে যোগ দেন আরও তিনজন।

এদিকে নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর উদ্যোগ নেন। ফলে টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর ৩১ মে থেকে পুঁজিবাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়। নতুন নেতৃত্বের অধীনে পুঁজিবাজার চালু হলেও অব্যাহত থাকে লেনদেন খরা।

দেখা গেছে, জুলাই মাসে এসে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেয় নতুন কমিশন। অনিয়মে জড়িত থাকায় একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়। 

পরবর্তীতে আইসিবিকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বাতিল করা হয় এক ডজন দুর্বল কোম্পানির আইপিও। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ ধরনের একের পর এক পদক্ষেপের ফলে ঘুরে দাঁড়ায় দেশের পুঁজিবাজার। ৫০ কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া লেনদেন এখন হাজার কোটি টাকার ওপরে দাঁড়িয়েছে। অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে এই লেনদেন। তবে অবশ্য লেনদেনের পরিমাণ আরও বেশি হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই বাজারে এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন কিছুই না। দৈনিক গড় লেনদেন তিন থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

এ সময় পুঁজিবাজার থেকে অনিয়ম করে কেউ অর্থ লুটের সুযোগ পাবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখান থেকে কেউ যাতে কাউকে ঠকিয়ে, লুট করে, জালিয়াতি করে, চালাকি করে টাকা-পয়সা নিয়ে যেতে না পারে এজন্য আমাদের সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে। আমরা প্রত্যেক কমিশন মিটিংয়ে এ ধরনের কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমরা যতদিন আছি কেউ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করার সুযোগ পাবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজার সবচেয়ে ভালো সময় পার করেছে ২০০৯ ও ২০১০ সাল। এই দুই বছরে রমরমা ছিল বাজার। সে সময় পুঁজিবাজার সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে, দলে দলে বিনিয়োগকারীরা ছুটে আসেন। সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষার্থী, সবাই দেদারছে বিনিয়োগ করেন পুঁজিবাজারে। ফুলেফেঁপে ওঠে বাজার। ফলস্বরূপ ২০১০ সালের শেষদিকে এসে মহাধসে পড়ে পুঁজিবাজারে। পুঁজি হারান কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী। পুঁজি হারিয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন তারা। এমনকি পুঁজি হারিয়ে আত্মহত্যার ঘটাও ঘটে।

ওই মহাধসের পর পুঁজিবাজার ঠিক করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী প্রচেষ্টা চালানো হয়। ২০১৪-১৫ এবং ২০১৭ সালে বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে। কিন্তু সেসব ঊর্ধ্বমুখী ধারা ছিল সাময়িক। বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতেই একধরনের বিক্রির চাপ বেড়ে যেত। সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বেশকিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও প্রবেশ করত। ফলে সামগ্রিকভাবে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস স্থায়ী হতো না।

২০১০ সালের পর থেকে মূলত পুঁজিবাজার ধসের মধ্য দিয়েই গেছে। এর মধ্যে ২০১৯ সাল এবং চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে অনেকটাই গলার কাটায় পরিণত হয়। লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অনেকে পুঁজিবাজার ছাড়েন। তবে এখন পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরায় বাজারে আবার নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আসছেন।

এদিকে পুঁজিবাজারের বর্তমান চিত্র প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্চের পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিএসইসি সম্প্রতি বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার পাশাপাশি বেশকিছু কোম্পানির আইপিও বাতিল করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সাহসী ভূমিকা আগে দেখা যায়নি। এ কারণে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। যার সুফল এখন দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, ২০১০ সালের ধসের পর এত ভালো আবস্থা আর দেখা যায়নি। ২০১০ সালের পর বাজার কয়েকবার ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো সময় ছিল ২০১৪-১৫ সাল। কিন্তু সে সময় বাজারে বেশকিছু দুর্বল কোম্পানি আসে। যে কারণে বাজার ধরে রাখা যায়নি।

সুতরাং বর্তমানে পুঁজিবাজার যে ফুরফুরে অবস্থায় রয়েছে, এটা ধরে রাখতে বিএসইসির সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো ধরে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারে যাতে দুর্বল কোম্পানি আসতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভালো ভালো কোম্পানির আইপিও আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বাজারের বর্তমান চিত্র দীর্ঘস্থায়ী হবে।

বিষয়টি নিয়ে ডিএসই’র অপর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বিএসইসির কার্যকর পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে পুঁজিবাজার খুব ভালো আবস্থানে রয়েছে। তবে এরপরও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত হতে হবে। তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে এবং অধিকার আদায়ে সচেতন হতে হবে। গুজবের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না। বিনিয়োগকারীরা শিক্ষিত হলেই বাজারের ভিত শক্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, গত ১০ বছরে পুঁজিবাজারে কোনো সুশাসন ছিল না। একের পর এক বাজে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়ে পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। যেসব নিরীক্ষক মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে পুঁজিবাজারে বাজে কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত হতে সহায়তা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাদের শেয়ারবাজারে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।

হাসি ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের মুখে: চলতি বছরের শুরুতে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় ভুগছিলেন বিনিয়োগকারীরা। হতাশায় নিমজ্জিত বিনিয়োগকারীরা লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে পুঁজিবাজার ছাড়ার পথ খুঁজছিলেন। সেসব বিনিয়োগকারী এখন পুঁজি হারানোর শঙ্কা ভুলে মুনাফার মুখ দেখছেন।

ফলে হাসি ফিরেছে তাদের মুখে। ব্রোকারেজ হাউজ-বিমুখ হয়ে পড়া অনেক বিনিয়োগকারী আবার মতিঝিলের হাউজগুলোতে যাওয়া শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর পুঁজিবাজার এতটা ভালো অবস্থানে কখনও আসেনি। বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের সাহসী নেতৃত্বের কারণে আজ আমার বিনিয়োগকারী ভাইয়েরা তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বিএসইসি যে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। কোনো চাপেই বিএসইসিকে এ পথ থেকে সরে আসা যাবে না।

বাজারে ৪১ হাজার নতুন বিনিয়োগকারী: দীর্ঘ পতনের ধারা কাটিয়ে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরায় নতুন নতুন বিনিয়োগকারীরা আসতে শুরু করেছেন। গত দেড় মাসে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী এসেছেন ৪১ হাজারের ওপরে।

সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ আগস্ট বিও হিসাব ছিল ২২ লাখ ৯৯ হাজার ১৪০টি। যা বর্তমানে (১৭ সেপ্টেম্বর) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৪১ হাজার ১৫৯টিতে। অর্থাৎ গত দেড় মাসে বিও হিসাব বেড়েছে ৪১ হাজার ৯০৮টি। এর মধ্যে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই নতুন বিও হিসাব বেড়েছে ২৪ হাজার ১৬৩টি। নতুন যে বিও হিসাব বেড়েছে তার মধ্যে ৪১ হাজার ৭৮৯টি ব্যক্তি বিনিয়োগকারী। এর মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪ হাজার ৪৪ জন এবং নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে সাত হাজার ৭৪৫ জন। বাকিগুলোর মধ্যে ২২৯টি প্রাতিষ্ঠানিক বিও হিসাব। একটি অমনিবাস হিসাব।

সক্রিয় হচ্ছেন বড় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা: বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে বেশকিছু বড় বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়েছেন। প্রতিনিয়ত তারা পুঁজিবাজারে লেনদেন করছেন। এসব বিনিয়োগকারীর বড় অংশই বেশকিছুদিন বাজারে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বড় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়িয়েছেন।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৫৭১ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেন করেছেন। গত মাসের প্রথম ১৫ দিনে বিদেশিদের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫১৪ কোটি তিন লাখ টাকা।

বিদেশিদের পোর্টফোলিও নিয়ে কাজ করেন এমন একটি ব্রোকারেজ হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, অনেকদিন ধরেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল। চলতি মাসে তাদের শেয়ার বিক্রির চাপ কিছুটা কমেছে। বিক্রির বদলে এখন তারা শেয়ার কেনায় বেশি মনোযোগী। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি তারাও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

বিনিয়োগ বেড়েছে সাড়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকা: পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরায় তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে ৭৫ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৮ জুন ডিএসই’র বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ১০ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। যা ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮৫ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম ওই পরিমাণ বেড়েছে।

সূচক ও লেনদেন: গত জুলাই মাসের শুরুতে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ছিল তিন হাজার ৯৮৬ পয়েন্ট। যা ১৭ সেপ্টেম্বরের লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ১০৪ পয়েন্টে। অর্থাৎ আড়াই মাসে সূচকটি বেড়েছে এক হাজার ১১৮ পয়েন্ট।

এদিকে, জুলাই মাসে যে লেনদেন ৫০ কোটি টাকার আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল, তা ৯ আগস্ট হাজার কোটি টাকায় ওঠে। এরপর থেকে ডিএসইতে দৈনিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা হওয়া অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। গত এক মাসে ডিএসইতে গড়ে প্রতি কার্যদিবসে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ