দেশের অকল্পনীয় উন্নতি হলেও দুইটা ক্ষেত্রে হয়নি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২০, ০৯:২৮ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, গত ১২ বছরে বাংলাদেশের অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু দুইটা ক্ষেত্রে তা হয়নি। এরমধ্যে একটি ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও এবং অপরটি ক্যাপিটাল মার্কেট জিডিপি রেশিও। এ নিয়ে অন্যান্য দেশ প্রশ্ন তুলে।

শনিবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মার্কেটের একটি দূর্বলতা হচ্ছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর কাঠামোও হাস্যকর। যেমন আইএফআইসি ব্যাংকের একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড আছে। কিন্তু এর কাঠামো এমনভাবে করা, যেখানে আইএফআইসি ব্যাংকের কিছু করার নেই। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে আইএফআইসি ব্যাংক একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড করবে কেনো। এটি ব্যাংকের জন্য ঝুকিঁর বিষয় আছে।

তিনি বলেন, গত ১২ বছরে বাংলাদেশের অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু দুইটা ক্ষেত্রে তা হয়নি। এরমধ্যে একটি ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও এবং অপরটি ক্যাপিটাল মার্কেট জিডিপি রেশিও। এ নিয়ে অন্যান্য দেশ প্রশ্ন তুলে। কারন উন্নত দেশগুলোতে এই দুই ক্ষেত্রও এগিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট দেশের অর্থনীতির জন্য যে কত গুরুত্বপূর্ণ, তা কেউ অস্বীকার করবে না। এই মার্কেটটাকে শক্তিশালী করা খুবই দরকার।

তিনি বলেন, নতুন কমিশন যোগদানের পরে মার্কেটে অনেকগুলো বিষয় করা হচ্ছে, যেগুলো আমরা চাচ্ছিলাম। অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজারটা অনেক উন্নতি করেছে। এছাড়া নতুন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মুস্তফা কামাল বন্ড মার্কেটকে উন্নত করার কথা বলেছিলেন। এছাড়া অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এরমধ্যে স্ট্যাম্প ডিউটি কমানো হয়েছে। এই বন্ড মার্কেটের উন্নত না হওয়াও ক্যাপিটালের মার্কেটের একটি দূর্বলতা। আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট সবসময় ইক্যুইটি মার্কেট। কখনো ডেবট মার্কেট ছিল না।

রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেটের অনেক সমস্যা রয়ে গেছে বলে জানান সালমান এফ রহমান। উদাহরন হিসেবে তিনি বলেন, বন্ডে স্ট্যাম্প ডিউটি কমানো হলেও ট্রান্সফার ফি ২.৫০ শতাংশ রয়ে গেছে। বন্ড লিস্টেড করে ট্রান্সফার করতে যদি ২.৫০ শতাংশ লাগে, তাহলে এই মার্কেট উন্নত করা কঠিন। এটা জিরো শতাংশ হওয়া উচিত। এটা দ্রুত করা উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ক্যাপিটাল মার্কেটে বড় সমস্যা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অভাব। এখানে রিটেইল ইনভেস্টর অনেক বেশি। অথচ অন্যসব দেশে যতগুলো ম্যাচিউরড, ইমার্জিং, ফ্রন্টিয়ার মার্কেট আছে, সব জায়গায় ৮০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। ওখানে লেনদেনের ১০ শতাংশ রিটেইল ইনভেস্টর। এর অর্থ ওখানে রিটেইল ইনভেস্টর নেই, তা না। ওখানে রিটেইল ইনভেস্টররা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে। তাই আমাদের মার্কেটটাকে আন্তর্জাতিক মানের আনতে হলে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-ইল-ইসলাম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সব সমস্যার সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে দেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। এই অবস্থা ধরে রাখতেই পুঁজিবাজার আরও উন্নয়ন করা হবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর এসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থের উৎস হতে পারে পুঁজিবাজার।

সোনালিনিউজ/এলএ/এমএএইচ