ইউটিউব দেখে মুরগির খামার করে পরিবারে সচ্ছলতা

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২০, ১২:৪৫ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : প্রতিটি মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনের গণ্ডির মধ্যে দৈনন্দিন কিছু না কিছু কাজ করে সাংসারিক জীবন ব্যবস্থার মান উন্নয়ন করার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে কারও সাংসারিক জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে আবার কারও আসে না। আর পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার একমাত্র চাবি হলো ইচ্ছাশক্তি, শ্রম আর আত্মবিশ্বাস। এই তিনের সমন্বয়ে একজন মানুষ পৌঁছতে পারে আর্থিক সচ্ছলতার স্বর্ণশিখরে।

স্বর্ণ শিখরে পর্দাপন করা এমনি একজন মানুষ হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকার শেখ মো. সাদায়েত হোসেন পিটন। তিনি তার স্ত্রী লিমা আক্তার ইউটিউব দেখে মুরগির খামার করে পরিবারে সচ্ছলতা এনেছেন।

পিটন বলেন, পরিবারের অভাব অনটন ঘোচাতে এক সময় তিনি বিদেশে চলে যান। সেখানে বেশ ভালই ছিল তার আয় রোজগার। কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর দেশে এসে তিনি আর কর্মস্থলে ফিরে যায়নি বলেন জানায়। এরপর সংসার চালাতে তাকে অনেক বেগ পেতে হয়। কোন উপায় না পেয়ে বাড়িতে একটি মুদি মালের দোকান দেন তিনি। সংসারের খরচ বাড়তে থাকায় তিনি বিকল্প পেশা খোঁজেন।

এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ইউটিউবে মুরগির খামার দেখে খামার করার উদ্যোগ নেন। স্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতায় গত প্রায় ৮ মাস আগে বাড়িতে প্রথমে ১শটি মুরগির বাচ্চা দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। বাচ্চা ক্রয় খাবারসহ অন্যান্য খরচ হয় ৫ হাজার টাকার উপর। ওই মুরগির বাচ্চাগুলো দুইমাস পালন করার পর বিক্রি হয় প্রায় ২০হাজার টাকা।

এরপর তাদের উৎসাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় পুনরায় তিনি ৩শ ছোট বাচ্চা ক্রয় করেন। ক্রয়সহ দুইমাস লালন পালনে খরচ হয় প্রায় ১৩ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ৫৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তার খামারে ১২শ ছোট বাচ্চা ও ৪শ মাঝারি মুরগি রয়েছে। ছোট বাচ্চাগুলো দুই মাস পর আর মাঝরিগুলো আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বড় গুলো বিক্রি করা হবে। তিনি আশা করছেন পরিবারের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা আয় হবে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মুরগি ব্যাপারীরা এসে তার কাছ থেকে ক্রয় করছেন বলে জানায়। তার সফলতা দেখে এলাকার বহু যুবক মুরগির খামারের দিকে ঝুঁকছেন।

পিটন বলেন, মুরগির বিষয়ে কিছু ধারনা থাকলে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। বেকার যুবকরা ঘরে বসে না থেকে মুরগির বিষয়ে কিছু ধারনা নিয়ে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, মানুষ ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারে আমি ও সেই চেষ্টায় করছি। তার ছেলেরা পড়াশুনার প্রতি রয়েছে যতেষ্ট আগ্রহ। বর্তমানে এক ছেলে পড়ছেন ৮ম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে একজন পড়ছেন। বর্তমানে তার খামার ব্যবসা ভালই চলছে। সংসারের বেশী ভাগ খরচ এই আয়ের মাধ্যমে করা হয় বলে জানায়। এ ব্যবসা করে আমি খুবই খুশি। কি ভাবে খামারটি বড় করা যায় এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছেন বলে জানায়।

ৱআখাউড়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো. কামাল বাশার বলেন, এলকার যুবকরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই মুরগিসহ বিভিন্ন খামার করছেন। তাদের সার্বিক সফলতায় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয় বলে জানায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই