ভর্তুকি বরাদ্দ কমানো হচ্ছে বাজেটে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ৩০, ২০১৬, ১১:৫৭ এএম

আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বরাদ্দ আরো কমানো হচ্ছে। মূলত বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকাতেই ভর্তুকি বরাদ্দ কম রাখা হচ্ছে। নতুন বাজেটে রফতানি খাতে প্রণোদনাসহ ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ২২ হাজার ৯শ’ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের ভর্তুকি বাবদ মূল বরাদ্দ থেকে ২ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা কম। অর্থাৎ আগামী বাজেটে ভর্তুকি কমানো হচ্ছে ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত কয়েক বছর যাবত প্রতিবছরই একটু একটু করে ভর্তুকি কমিয়ে আনছে সরকার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা এবং চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয় ২৫ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।

তবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে ১৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা করা হয়। যদিও সংশোধিত বাজেটকে ভিত্তি ধরলে আগামী বাজেটে অবশ্য ভর্তুকি বাড়ছে ৪ হাজার কোটি টাকা। যদিও দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক সাধারণত বিশাল অঙ্কের ভর্তুকির বিপক্ষে।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের মোট ভর্তুকির মধ্যে কৃষি, বিদ্যুৎ ও রফতানি প্রণোদনা হিসাবেই ৮০ শতাংশ টাকা বরাদ্দ থাকছে। আর ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের শিল্প, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন, চামড়াজাত ও পাটজাত দ্রব্যে রফতানি ও প্রেেণাদনা থাকছে। আগামী বাজেটে খাদ্য খাতে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে ২ হাজার কোটি টাকা এবং রফতানি খাতে নগদ প্রণোদনা থাকছে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

তাছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতিবছরই ভর্তুকি পেয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরেও বিপিসিকে ভর্তুকি দিতে ৮শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই টাকা বিপিসির লাগেনি। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় এবং কয়েক বছর ধরে মুনাফা করায় আগামী বাজেটে জ্বালানি ভর্তুকি বাবদ বিপিসির জন্য কোনো টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে না।

সূত্র আরো জানায়, মোট ভর্তুকির মধ্যে একক হিসাবে সবচেয়ে বেশি পেয়ে থাকে কৃষি খাত। কৃষকের সার, বিদ্যুৎ, কৃষি উপকরণ, উন্নত মানের বীজ কেনা বাবদ ওই ভর্তুকি ব্যয় হয়। চলতি অর্থবছরে কৃষিতে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংশোধিত বাজেটে ২ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়। তবে আগামী বাজেটেও ৯ হাজার কোটি টাকাই রাখা হচ্ছে বলে জানা যায়। কৃষির পরই বড় ভর্তুকি পেয়ে থাকে বিদ্যুৎ খাত।

চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জন্য রাখা হয়েছিল ৮ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি তেলের দাম কমায় যেহেতু বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচও কম হচ্ছে সেজন্য আগামী অর্থবছওে ওই খাতে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে ৬ হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রতিবছরই বড় অঙ্কের টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়। সরকার চাচ্ছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে।

এ প্রসঙ্গে অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ জানান, জ্বালানি খাতে এবার ভর্তুকি থাকার সম্ভাবনা নেই তবে অন্যান্য খাতে থাকছে। যে যে খাতে ভর্তুকি দেয়া দরকার সেগুলোতেই তা দেয়া হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আমা