‘রিজার্ভ চুরির রিপোর্ট প্রকাশ শিগগিরই’

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০১৬, ০৬:০১ পিএম

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন কয়েকদিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সোমবার (১১ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঈদের ছুটি পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দে হ্যাভ ফাইনালাইজ দ্য রিপোর্ট। সে অনুসারে অ্যাকশনও হচ্ছে। ইন এ ফিউ ডেইজ টাইম, আই শ্যাল রিলিজ দ্যা রিপোর্ট।

সাম্প্রতিক সময়ের গুলশান হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। তবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছে সরকার।

দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে এসব হামলার কোনো প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করেন আবুল মাল আবদুল মুুহিত।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকে। অপর এক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারের আগে আটকানো গেলেও ফিলিপাইনের ব্যাংকে যাওয়া অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে ব্যক্তি হাতে চলে যায়।

ওই চুরির ঘটনার প্রায় এক মাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা জানতে পারে বাংলাদেশের মানুষ।

এরপর রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের রদবদল হয়।

রিজার্ভ চুরি ঘটনার তদন্তে সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গত ১৫ মার্চ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস।

বেধে দেয়া সময় অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেয় ফরাসউদ্দিনের কমিটি। এরপর ৩০ মে পুরো প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই সময় প্রতিবেদন প্রকাশ সম্পর্কে মুহিত বলেছিলেন, পুরো প্রতিবেদন ‘পড়ে দেখে’ তারপর প্রকাশ করা হবে।

২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণার আগ মুহূর্তে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে তা প্রকাশ করা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর তদন্ত কমিটির প্রধান ফরাসউদ্দিন বলেছিলেন, রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও সম্পৃক্ততা নেই বলে আগে তারা ধারণা করলেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ওই অবস্থান থেকে তারা ‘সামান্য’ সরে এসেছেন।

তিনি আরও বলেন, সুইফটেরও দায় দায়িত্ব আছে, সম্পূর্ণ দায় বা মূল দায় তাদের কি না- সেই বিশ্লেষণও প্রতিবেদনে আছে। সুফইট কখনও দায় এড়াতে পারে না। তবে সুইফটের সাহায্য নিয়েই আমাদের ভবিষ্যতের সমস্যা সমাধান করতে হবে। চুরি যাওয়া টাকা আদায়ের বিষয়েও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাসউদ্দিন।

ভুয়া সুইফট মেসেজ পাঠিয়ে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সাইবার চুরির ওই ঘটনায় কারা কারা জড়িত, সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি কী কী সুপারিশ করেছে- সে তথ্য প্রকাশ করেননি তদন্ত কমিটির প্রধান বা অর্থমন্ত্রী।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/আকন