বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মূল্যায়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত বিজিএমইএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে পোশাক খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে শিল্পের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান এবং পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, আইএমএফ প্রতিনিধিদলে ছিলেন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন ও রুইফেং ঝাং এবং অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।
আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা মূল্যায়নের অংশ হিসেবে পোশাক খাতের পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বুঝতে এই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মার্কিন শুল্কনীতি, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর সম্ভাব্য প্রভাব, এবং রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখার কৌশল নিয়ে উভয় পক্ষ মতবিনিময় করে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ইতিমধ্যে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে ধীরে ধীরে প্রযুক্তিনির্ভর ও উচ্চমূল্য সংযোজিত উৎপাদন ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হচ্ছে। শিল্পে উদ্ভাবন, দক্ষতা বৃদ্ধি, ম্যান-মেইড ফাইবার ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সভায় তারা আরও উল্লেখ করেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের স্থিতিশীলতা, বন্দর কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা এবং ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ প্রধান অবকাঠামো দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্ক সুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদার দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে বিজিএমইএ।
এম