আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে এখন কত?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু)-এর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আমদানি বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) আকুর কাছে ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন (১৬১ কোটি) মার্কিন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এই অর্থ মূলত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আকুর সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে আমদানি করা পণ্যের মূল্য পরিশোধে ব্যয় হয়েছে। আকুর নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলো দুই মাস অন্তর আমদানি লেনদেনের বিল পরিশোধ করে থাকে।

এর আগে গত মাসে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আকু বিল পরিশোধের পর তা সাময়িকভাবে কমে এলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় সামগ্রিকভাবে রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০২২ সালের আগস্টে, প্রায় ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও অনিয়ন্ত্রিত অর্থপাচারের কারণে রিজার্ভে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে।

তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি বন্ধ রেখে অর্থপাচার রোধে কঠোর অবস্থান নেয়। পূর্ববর্তী সরকারের রেখে যাওয়া প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধ করেও এখন রিজার্ভ তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে।

সবশেষ ৬ নভেম্বরের হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার, আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী তা ২৮ বিলিয়ন ডলার। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ হিসাব অনুযায়ী নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার করে প্রায় পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অন্তত তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভই একটি দেশের জন্য ন্যূনতম নিরাপদ বলে ধরা হয়; সে হিসাবে বাংলাদেশ এখনো স্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে।

আকু কী?

আকু হলো জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন–এর আওতাধীন একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। ইরানের রাজধানী তেহরানে সংস্থাটির সদর দপ্তর।

এম