বিদেশি বিনিয়োগ টানতে উন্নয়ন মেলা করবে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০১৮, ০৭:২৪ পিএম

ঢাকা: সপ্তম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়ন অগ্রগতির পর্যালোচনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ)-২০১৮ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ১৭ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন। এতে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক নিয়োগ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৈষম্য রোধ, নারী নির্যাতন রোধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে।

সোমবার(১৫ জানুয়ারি) শেরেবাংলানগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিডিএফের আয়োজনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। এসময় ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজমসহ অর্থমন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলনটি। উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এই সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোই প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বিনিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছি। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই। আমরা শিগগিরই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাবো। আমাগী মার্চ মাসে জাতিসংঘের একটি সভায় এ ঘোষণা দেয়া হবে। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতি খুব ভালোর দিকে যাচ্ছে।

চীনের সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, দাতা হিসেবে চীন নতুন। তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, তবে এটা কেটে যাবে। চীনের অর্থায়নে ইতোমধ্যে চারটি প্রকল্পের ঋণচুক্তি হয়েছে। 

মন্ত্রী বলেন, চীনের অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ অনেক দূর এগোলেও এটি এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে। যে বিদেশি সংস্থাকে কাজের টেন্ডার দেয়া হয়েছিল, তারা শেষ মুহূর্তে এসে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করায় কাজটি এগোয়নি।

বিডিএফ সম্মেলনে ভারত-চীনের দৃশ্যমান অংশগ্রহণ না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ইআরডি সচিব বলেন, সম্মেলনে পার্টনার হিসেবে উন্নয়ন সহযোগীদের সবাই সম্পৃক্ত আছেন। ভারতের হাইকমিশন ও চীনের দূতাবাস এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে।

তবে এসডিজি অর্জনে অর্থায়নকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে দাতাদের কাছ থেকে খুব বেশি অর্থ পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না। কারণ এমডিজির সময়ও তারা যে পরিমাণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার বাস্তবায়ন করেনি। এক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতার ওপর জোর দিতে হবে এবং আমরা এটি পারবো। আমরা ইতোমধ্যে এমডিজিতে সাফল্য অর্জন করে দেখিয়ে দিয়েছি। 

একই প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে ৯২৮ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ আসবে বিদেশি বিনিয়োগ থেকে, যার ১০ শতাংশ আবার এফডিআই অর্থাৎ মাত্র ৫ শতাংশ অর্থায়ন আসবে ওডিএ থেকে। দাতাদের সাথে এ বিষয়ে বিডিএফ ফোরামে আলোচনা হবে।

আয়োজকরা জানান, আগামী ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে। ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (অফিদ)’র মহাপরিচালক সুলেইমান জাসির আল হারবিশ, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেট ডিক্সন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাবসি প্রেসিডেন্ট ওয়েন চাই ঝ্যাং, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমহাপরিচালক মিরু মাসুজিমা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

ফোরামে আটটি কর্মঅধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশের কৃষি উন্নয়নে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক নিয়োগ, বেসরকারিখাতের আরও বেশি অংশগ্রহণ, মানবসম্পদের উন্নয়ন, বৈষম্য রোধ, নারী নির্যাতন রোধ, নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং টেকসই উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে।

সোনালীনিউজ/আতা