ঢাকা: রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৮ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করেছে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি। পাশাপাশি পরীক্ষার অব্যবস্থাপনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতভাবে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ প্রেসবিফিংয়ে বলেন, ‘ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি শুক্রবারের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামাল। সদস্যসচিব থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন মহাব্যবস্থাপক। সদস্য থাকবেন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা ও রাকাব ও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষঠানেরর একজন প্রতিনিধি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের যারা পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল। তাদের কাছে একটি ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।’
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র ও বসার জায়গা না পেয়ে শাহ আলী মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধও করেছেন। ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০ জানুয়ারি। গত শুক্রবার সারা দেশে মোট ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাইরের ফটকে রোল নম্বর টাঙানো থাকলেও অনেক কেন্দ্রে পরীক্ষার হলে আসনবিন্যাস ঠিকমতো ছিল না। যে যার মতো বসেছেন। দুজনের ছোট বেঞ্চে বসতে হয়েছে চার থেকে ছয়জনকে। পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পরও অনেক কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র যায়নি।
অনেক কেন্দ্রে ছাপা প্রশ্নপত্র এতটাই অস্পষ্ট ছিল যে তা পড়তে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার কেন্দ্রে মুঠোফোন নিষিদ্ধ থাকলেও অধিকাংশ কেন্দ্রেই পরীক্ষার্থীরা তা নিয়ে ঢুকেছেন। পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকে ফেসবুকে চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে পরীক্ষার অব্যবস্থাপনা নিয়ে ছবি আর ভিডিও আসা শুরু করে।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া বহু শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে জড়ো হন। পুলিশ সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে।
গত বছর সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষাসহ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি সে আদেশ স্থগিত করেন। এই আদেশের ফলে ওই তিন ব্যাংকসহ আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার (সাধারণ) ১ হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫২৫ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই