অধিকাংশ পণ্যের উত্তাপ কমেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৮, ০৩:০৩ পিএম

ঢাকা : রমজানের বাড়তি চাহিদার পণ্যের কদর কমতে শুরু করেছে। অধিকাংশ ক্রেতা সারা মাসের পণ্য কিনে ফেলেছেন। ফলে উত্তাপ ছড়ানো পণ্যগুলোর দাম কমতে শুরু করেছে।

শুক্রবার (২৫ মে) বাজারে আগের সপ্তাহ থেকে কম দামে কেনাবেচা হয়েছে পেঁয়াজ, বেগুন, চিনি, ছোলা, শসা, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন পদের সবজি।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে সৃষ্ট বাড়তি চাহিদা কমে আসায় এর প্রধান কারণ। বিশেষ করে পেঁয়াজের দাম ভারতে আরো কমে এসেছে। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এ ছাড়া পেঁয়াজ আমদানি গতিশীল করতে বেনাপোল বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ভারতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম নেমেছে মাত্র ৬ রুপিতে। ফলে এসব পেঁয়াজ আমদানি করে ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে, যা খুচরা বাজারে এসে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে পাচ্ছেন ক্রেতারা। যা এক সপ্তাহ আগেও ১০ টাকা বেশি ছিল। তবে সেই তুলনায় না কমলেও দেশি পেঁয়াজের দাম ৫-৭ টাকা কমেছে।  

এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানের আগে ৮০-১০০ টাকার বেগুন এখন ৫০ টাকায় নেমেছে। অবশ্য কিছু কিছু বাজারে দাম ৬০ টাকা। এ ছাড়া শসার দামও কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৩০-৪০ টাকা ও অন্যান্য সবজিও প্রকারভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে নেমেছে। যদিও গত সপ্তাহে ৬০ টাকার নিচে মেলেনি কোনো সবজি।  

সেগুনবাগিচা বাজারে বিক্রেতা সফিক বলেন, রোজার শুরুতে হঠাৎ পণ্যের চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ কারণে দামও ওই সময়ে প্রচুর হেরফের হয়। গত সপ্তাহে এমনটা হয়েছে। সে সময় সবজির দাম বছরের সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল। এখন ক্রেতাদের চাহিদা কমায় দামও কমেছে। এখন বাজারে ক্রেতাও তেমন নেই।  

এদিকে মুদিবাজারে রোজার শুরুতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। গতকাল তা আবার কমে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় নেমেছে। সঙ্গে ছোলার বাড়তি দামও কেজিতে পাঁচ টাকা কমে এখন সর্বোচ্চ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লার কিছু দোকানে এর ব্যতিক্রমও দেখা গেছে। কিছু কিছু দোকানে আগের বাড়তি দামেই এসব পণ্য কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।  

পেঁয়াজের পাশাপাশি কেজিতে ২০ টাকা কমে আমদানি করা চীনা রসুন এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও দেশি রসুন আগের ৬০ টাকা দামেই রয়েছে। তবে আদার দাম এখনো কমেনি। প্রতি কেজি দেশি আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও আমদানি করা আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিকে কিছু দোকানে ব্রয়লার মুরগির দাম ৫-১০ টাকা কমলেও লেয়ার, কক বা দেশি মুরগির দাম কমেনি। প্রতি কেজি লেয়ার ও কক ১৮০-২০০ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে।  সেই সঙ্গে এখনো কার্যকর হয়নি সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মাংসের দাম। রোজার শুরুতে প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৪৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে দোকানে টাঙানো সিটি করপোরেশনের মূল্য তালিকা অনুযায়ী ৪৫০ টাকা দরে মাংস মিলছে না।

এদিকে রমজানের শুরুতে বেড়ে যাওয়া মাছের দাম একই রকম রয়েছে। রোজার আগেও খিলগাঁও রেলগেটে প্রতি কেজি বড় সাইজের রুই কাতলা বা মৃগেল মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে রোজা শুরুর পর এসব মাছ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। এখনো ওই দামেই বিক্রি হচ্ছে।  

মহসীন আলী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, রমজান উপলক্ষে অন্যান্য পণ্যের চাহিদা কমলেও মাছের চাহিদা এত তাড়াতাড়ি কমে না। এ সময় অনেক ক্রেতাই টাটকা মাছ খেতে পছন্দ করেন। ফলে দু-একদিন পরপরই বাজারে আসেন।  

আরেক বিক্রেতা বলেন, চাহিদার পাশাপাশি বর্ষার কারণে আবার আমদানি কম। তাই সব থেকে বেশি ছোট মাছের দাম। পাইকারি বাজারেও আমরা ছোট মাছ ৪৫০ টাকার নিচে কিনতে পারছি না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই