বিআইবিএমের গোলটেবিল

বৈদেশিক বাণিজ্যে সেন্ট্রাল ডাটাবেজ করার সুপারিশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৯, ২০১৮, ০৪:২৯ পিএম

ঢাকা : বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্রেডিট রিপোর্টের জন্য একটি সেন্ট্রাল তথ্য ভান্ডার (ডাটাবেজ) তৈরি করতে পারলে ঝুঁকি ও খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। সেন্ট্রাল ডাটাবেজ থাকলে কোনো দুর্বল এবং ভুয়া ক্রেডিট রিপোর্ট সরবরাহের সুযোগ থাকবে না। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাংক খাতের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে। কমবে অনিয়ম এবং জালিয়াতির ঘটনাও।

সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘প্র্যাকটিসেস অব অবটেইনিং ক্রেডিট রিপোর্ট অব ফরেন কাউন্টার পার্টস ইন ট্রেড সার্ভিসেস- ইজ ইট ওয়ার্কিং?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ বৈঠকের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। তিনি অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে অর্থায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি। তিনি গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়টির ওপর সূচনা বক্তব্য দেন। গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব। ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন।

গবেষণা দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক অন্তরা জেরীন, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ পাল, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাহমুদুর রহমান এবং মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এটিএম নেছারুল হক।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ, চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, কমার্স ব্যাংক এজির চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ তৌফিক আলী।

গোলটেবিল বৈঠকের উদ্বোধন করে বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো দক্ষতার পরিচয় দিতে না পারলে ব্যাংক এবং রাষ্ট্রীয় ঝুঁকি দুটোই বাড়বে।

তিনি বলেন, অর্থ পাচার ঠেকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। শেল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কোনো লেনদেন যাতে না হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আরো কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, সম্প্রতি একটি রফতানি আদেশের বিপরীতে ২৬টি প্রতিষ্ঠান পণ্য রফতানি করার পরও পেমেন্টে পায়নি। আমদানিকারককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৬০০ কোটি টাকা অনিয়মের ঘটনা পরবর্তীতে সবার নজরে আসে। ক্রেডিট রিপোর্ট অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।  

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য ব্যাংকারদের সতর্ক থাকতে হবে। ব্যাংকাররা সতর্ক থাকলে কোনো অনিয়মের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই।

বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থপাচারের ৮৩ শতাংশ হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে। এ কারণে ব্যাংক সতর্ক থাকলে কোনো অনিয়ম ঘটার সুযোগ নেই।

কমার্স ব্যাংক এজির চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ তৌফিক আলী বলেন, ব্যাংকের পরিচালকদের লোভের কারণে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হচ্ছে। ব্যাংক পরিচালকদের লোভ সংবরণ করতে হবে। একই সঙ্গে ট্রেড সার্ভিস বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই