বেড়েছে ডলারের দাম, মান কমেছে টাকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০১৮, ০৬:০৯ পিএম

ঢাকা : স্থানীয় মুদ্রা বাজারে বেড়েছে ডলারের দাম। গত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবেই বেড়েছে ডলারের দাম। আন্তর্জাতিক এই মুদ্রার মানের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধি দেশের আমদানি খাতের জন্য মোটেও সুখকর নয় বলে মনে করছেন আমদানিকারকরা। আমদানি বানিজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা জরুরী বলে মনে করছেন তারা।

প্রতি ডলারের বিপরীত মূল্য: ২০১৪ সালে ৭৭.৯৫ টাকা, ২০১৫ সালে ৭৮.৫০ টাকা, ২০১৬ সালে ৭৮.৭০ টাকা, ২০১৭ সালে ৮২.৭০ টাকা, ২০১৮ সালে ৮৫.৯০ টাকা।

এ সম্পর্কে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের অর্থনিতি বিভাগের প্রভাষক মো: মাহ্ফুজুল হক জানান, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ক্রমশ কমে যাওয়াটা বেশ উদ্বেগের।টাকার মান কমার সাথে সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এর ফলে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যা আমরা আমদানি করে থাকি যেমন, চাল, গম, ভোজ্য তেল, ডাল, পিঁয়াজ চিনি, আদা-রসুন, মরিচ, মসলা এগুলোর দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাবে। যার নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনিতীতে পড়বে।

বর্তমানে বার্ষিক আমদানি ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।তার বিপরীতে রফতানি ৬৫ হাজার কোটি টাকাও হচ্ছে না।এই ভারসাম্যহীন আমদানিতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। বর্তমানে যা এক হাজার কোটি ডলারের নীচে নেমে গেছে, অর্থাৎ আমাদের তিন মাসের আমদানির পরিমাণও রিজার্ভ নেই। এক ভারত থেকেই বছরে আসে ৫৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য। এক হিসাবে দেখা যায়, বাংলাদেশ বছরে মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি করতে পারে। শুধুমাত্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

ভারত বাংলাদেশে চাল রপ্তানি করে টন প্রতি ৫০০ ডলার। অথচ মিয়ানমারের চাল রফতানির মূল্য ৩৬০ থেকে ৩৬৫ ডলার, ভিয়েতনামে ৩৭০,পাকিস্তানে ৪১৫ থেকে ৪২০, থাইল্যান্ডে ৩৭০ ডলার।

গত ৫ বছরে টাকার বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে ডলারের মূল্য। ফরেন এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো বলছে গত কয়েক মাসে ডলারের দাম ছুঁয়েছে প্রায় ৮৬ টাকা।আমদানিকারকরা বলছেন, আমদানি নির্ভর প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য এবং পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে টাকার বিপরীতে ডলারের মান আর বাড়তে দেওয়া উচিৎ হবে না।

তবে রপ্তানিকারকরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার ফলে তৈরি পোশাক খাতে সক্ষমতা আরো বাড়বে। এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী জানান, রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য রপ্তানি মুদ্রানীতি চালু করা এখন সময়ের দাবি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে ডলারের দাম চড়া থাকা স্বাভাবিক, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিৎ সরকারি আমদানিকে বিশেষ সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে বাজারকে স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নেয়া। ডলারের বিপরীতে টাকার সক্ষমতা ধরে রাখতে দীর্ঘমেয়াদী রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই