নতুন নীতিমালায় লাভবান ঋণ খেলাপীরাই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯, ০১:০৫ পিএম

ঢাকা : ব্যাংকিং খাতে ঋণ অবলোপনের নতুন যে নীতিমালা করা হয়েছে তাতে খেলাপী ঋণ কমার চাইতে উল্টো ঋণ খেলাপীরাই বেশী সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে ভাল বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। সব মিলিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আর্থিক খাতে। অর্থনীতিবিদদের হিসাব অনুযায়ি আদায়যোগ্য নয় এমন ঋণের পরিমাণ এখন ৩৮ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আর আদায়যোগ্য নয়, এমন অর্থ চলতি হিসাব থেকে বাদ দিতেই সাম্প্রতিক ঋণ অবলোপন সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

বছরের পর বছর ব্যাংকিং খাতে আদায় অযোগ্য খেলাপি ঋণকে চলতি আয়-ব্যয়ের হিসাব বা ব্যালেন্স শিট থেকে বাদ দেয়াকে ঋণ অবলোপন বলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলো তা করে আসছে। যেখানে পাঁচ বছরের খেলাপি ঋণ এবং মামলা না করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অবলোপনের সুযোগ ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে এই নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়। নতুন নিয়মে অবলোপনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকাকে বাড়িয়ে দু’লাখ আর পাঁচ বছরের পরিবর্তে তিন বছর পর্যন্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা ঋণের মধ্যে আদায়যোগ্য নয় এমন অর্থের হিসাবকে বাদ দিতেই এই নীতিমালা করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে ঋণ খেলাপের চিত্র পরিবর্তন না হয়ে উল্টো খেলাপীরাই বেশি সুবিধা পাবে।

২০০৩ সালে নীতিমালা হওয়ার পর থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ৪৯ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। আর এর মধ্যে মাত্র আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। ফলে ৩৮ হাজার কোটি টাকা আর আদায়যোগ্য নয়। বিশ্লেকরা বলছেন, ঋণ অবলোপনের নতুন নীতিমালার কারণে ভাল ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবার পাশাপাশি অর্থপাচার বাড়বে। নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের উপর।

এছাড়া বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে দেড় লাখ কোটি টাকার খেলাপী ঋণ রয়েছে, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় সাড়ে ১১ শতাংশ। অথচ একটি সুস্থ অর্থনীতিতে খেলাপী ঋণ থাকে ৩ শতাংশের নিচে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই