বাণিজ্য মেলায় ‘হাজতখানা’

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০১৬, ১০:৩১ পিএম

সোনালীনিউজ ডেস্ক
১৫ ফুট বাই ১৫ ফুটের অস্থায়ী হাজতখানা। অন্ধকার কক্ষে আলো-বাতাস প্রবেশের জন্যে পাঁচটি গোলাকৃতির ছিদ্র রাখা। একটি ছিদ্রে হাত রেখে অন্যটি দিয়ে মুখ দেখানোর চেষ্টা ৩০ বছর বয়সী মোশাররফ হোসেনের। মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরির অপরাধে তাকে আটক করে এনে এখানে বন্দি রেখেছে পুলিশ।

এ চিত্র রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে চলমান ‘ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা’র অস্থায়ী হাজতখানার। মেলার প্রধান ফটক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এ হাজতখানার অবস্থান।

সামনের দিক ছাড়া তিন পাশেই টিন, ছাউনিও টিনের। সামনের দিকে হার্ড বোর্ড। স্টিলের দরোজায় ছিটকানি দিয়ে তালা মারা। হাজতখানার মেঝেতে বালুর ওপর ইট বিছানো।

শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে ঘুরে দেখা যায়, মোশাররফ ছাড়াও হাজতখানায় বন্দি আরও দুই অপরাধী। এদের মধ্যে হকারও আছে। যদিও ঘরটার ধারণক্ষমতা ২০। ভেতরে ১০০ ভোল্টের একটি বাল্ব জ্বলছে।

হাজতখানার পাশের কক্ষটি মালখানা। বিপরীতে পুলিশের কন্ট্রোল রুম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার রুম, উপ-পুলিশ কমিশনারের কক্ষ। সেখানে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য বলছিলেন, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অপরাধীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। শুক্রবারও এক নারীকে আটকে রাখা হয়েছিল মোবাইল চুরির দায়ে।

মোশাররফ আর ওই নারীকে আটকের কারণ শুনে বোঝা গেল, মোবাইল চুরির অপরাধে আটকের সংখ্যাই এখানে বেশি।

ওই পুলিশ সদস্য জানান, কোনো অপরাধীকে ধরতে পারলে এ অস্থায়ী হাজতখানায় বন্দি রাখা হয়। এখানকার বিচার এখানেই হয়। ছোট চুরি করা লোক বা হকারদের ধরা হয়। কিছু জরিমানা করে বা শাসিয়ে এদের মেলা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে অপরাধ বড় হলে সেক্ষেত্রে থানায় নেওয়ার কথা বলা আছে। যদিও এখন পর্যন্ত তেমন বড় কিছু ঘটেনি।

মেলায় দায়িত্বরত শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম জহির জানান, শো-রুমে প্রবেশ করে ক্রেতাদের সামনে শো-রুমের লোক ভাব দেখিয়ে মোবাইল চুরি করে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, তেমন উল্লেখ করার মতো কিছু ঘটেনি।

তিনি জানান, মেলায় হকার ধরা পড়ছে প্রতিদিনই। কিন্তু এদের বয়স ১২ বছরের নিচে।  মেলার পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে জরিমানা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় এদের।

মেলায় কঠোর নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ১০৪টি সিসিটিভি দিয়ে পুরো মেলা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারও আছে।

জহুরুল ইসলাম জহির আরও জানান, প্রতিটি শিফটে সাড়ে তিনশ‘ পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন মেলায়। তিনটি শিফটে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন প্রায় এক হাজার পুলিশ।

তবে কোনো প্রতারক চক্র বা সংঘবদ্ধ চোর চক্র মেলায় সক্রিয় নেই বলে দাবি করেন তিনি। যদি কোনো অপরাধী ধরা পড়ে তৎক্ষণাৎই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান শেরেবাংলা নগর থানার এ উপ-পরিদর্শক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা