প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন-২০২০ এ প্রাথমিকের জন্য থাকছে যেসব বিধিমালা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০, ১২:১২ পিএম

ঢাকা: বেশকিছু বিধানসহ ৫৮টি ধারা সংবলিত শিক্ষা আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে সম্মিলিত কোনো শিক্ষা আইন নেই। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বলেন, শিক্ষা আইন-২০২০ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। সরকার একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করছে এবং তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, শিক্ষা আইনের খসড়া তৈরির কাজে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো যাবে।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত আইনে বিদ্যমান চার স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে- পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি উচ্চ মাধ্যমিক স্তর। এরপরে শুরু উচ্চশিক্ষা স্তর। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক স্তরের কথাও আছে আইনে।

২০১০ সালে সংসদে পাস করা শিক্ষানীতিতে প্রাক-প্রাথমিক বাদে তিন স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের কথা বলা আছে। তবে আইনের অন্য ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী এটি সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন সরকার সময়ে সময়ে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার স্তর নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণ করতে পারবে। আর নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণ হলে তা সার্বিকভাবে অনুসরণীয় হবে। সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক এবং শিশুর মৌলিক অধিকার হিসেবে এতে বিধান যুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার স্তর থাকতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, অন্য আইনে যা উল্লেখ আছে তাতে শিক্ষা আইনে বর্ণিত বিধান সংযোজিত বা প্রতিস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত আইন, বিধি বা প্রবিধি এ আইনের অধীন বা দ্বারা সংশোধিত বলে গণ্য হবে। একই কথা উল্লেখ আছে চতুর্থ অধ্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের ক্ষেত্রে। মাধ্যমিক শিক্ষার ধারা হবে তিনটি- সাধারণ শিক্ষা, মাদ্রাসা এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা।

প্রাথমিক স্তরের ক্ষেত্রে কোনো ধারা উল্লেখ নেই। এতে বিদ্যমান প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও অষ্টম শ্রেণিতে চলমান পরীক্ষা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

বিদেশি পাঠক্রমে পরিচালিত স্কুল, কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসা অথবা বিদেশি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে শাখা স্থাপন বা পরিচালনার জন্য নিবন্ধন করতে হবে। বিদেশি পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন, টিউশন ও অন্যান্য ফি আইন, বিধি বা আদেশ দ্বারা নির্ধারিত হবে।

এতে বলা হয়, আইন পাসের ৯০ দিন পর থেকে বাস্তবায়ন হবে নোট, গাইড এবং কোচিং, প্রাইভেট টিউশনসংক্রান্ত বিধান। আইনের ১৬ নম্বর ধারায় নোট-গাইড সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের নোট বা গাইড বই মুদ্রণ, বাধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব ৩ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া যাবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক সম্পর্কে বলা হয়েছে, নোট-গাইড বই ক্রয় বা পাঠে বাধ্য করলে বা উৎসাহ দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এখতিয়ারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোনালীনিউজ/এইচএন