স্মরণিকা নিয়ে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

ঢাবি ভিসির গাড়িতে হামলা, বাসভবন ঘেরাও

  • ঢাবি প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০১৬, ০৫:০৫ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকীর বাসভবন ঘেরাও করে রেখেছে। বাসভবন ঘেরাওয়ের পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ কর্মীরা ভিসির গাড়িতেও ভাংচুর চালিয়েছেন। এছাড়া টায়ার জ্বালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের সড়কও অবরোধ করে রেখেছেন তারা।
 
শুক্রবার জুমার নামাজের পর শুরু হওয়া এ কর্মসূচি থেকে তারা স্মরণিকায় জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করা লেখক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন।  ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে।

এদিকে হামলার সময় ঢাবি ভিসি গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িতে করে বাসভবনে প্রবেশের সময় কয়েকজন তরুণ জয় বাংলার স্লোগান দিয়ে ভিসির গাড়িতে ভাংচুর চালাতে থাকে।
 
এর আগে একই দাবিতে শুক্রবার দুপুরে রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ঘেরাও করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা এ সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে কার্যালয়ে প্রায় এক ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখেন।
 
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউর রহমানকে তালামুক্ত করে বের করে নিয়ে যান।  এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মেহেদী হাসান রনি এবং আদিত্য নন্দীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
 
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। এই স্মরণিকায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৫ বছর উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব রেজাউর রহমান 'স্মৃতি অম্লান' শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন।
 
সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বিবরণীতে জিয়া হলের বর্ণনায় তিনি লেখেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযু্দ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং ১৯৮১ সালের ৩০ মে সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।’
 
এতে আরও লেখা হয়, ‘তাঁর (জিয়াউর রহমান) স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য ১ জুন ১৯৮৮ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের যাত্রা শুরু। উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান হলটি উদ্বোধন করেন। ড. রহিম বক্স তালুকদার হলে প্রভোস্ট ডাইরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন।’
 
সকালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন ও শোভাযাত্রা শেষে টিএসসিতে এক আলোচনা সভায় বিষয়টি উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইয়ের এক সদস্য।  পরে ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী স্মরণিকাটি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন এবং সেটি প্রকাশে গঠিত কমিটিও বাতিল ঘোষণা করেন।

সোনালীনিউজ/এইচএআর