‘রাজাকারদের’ ৯ কলেজের নাম বদলের নির্দেশ

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০১৬, ০২:১৭ পিএম

ঢাকা: রাজাকার ও তাদের পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠিত কিংবা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের হাতে প্রতিষ্ঠিত এমন ৯টি কলেজের নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এসব কলেজ স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) চিঠি দিয়ে বলেছে, ‘মহান ব্যক্তিদের’ নামে এসব কলেজের নতুন নামকরণের প্রস্তাব পাঠাতে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকই থাকবে। শুধু নামগুলো পরিবর্তন হয়ে যাবে।

এই ৯টি কলেজ হলো টাঙ্গাইল বাসাইলের এমদাদ হামিদা ডিগ্রি কলেজ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ধর্মপুর আব্দুল জব্বার ডিগ্রি কলেজ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের মাওলানা সাইফুদ্দিন এহিয়া ডিগ্রি কলেজ, নাটোর নলডাঙ্গার ডা. নাসির উদ্দিন তালুকদার কলেজ, সাতক্ষীরা সদরের বাটকেখালী এম এ গফুর মডেল কলেজ, মেহেরপুরের মুজিবনগর আনন্দবাস মিয়া মনসুর একাডেমি, হবিগঞ্জের মাধবপুরের সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, চট্টগ্রামের লোহাগড়ার মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং রাঙ্গুনিয়ার সেলিনা কাদের চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ।

গত মাসে দেশের সব শিক্ষা কর্মকর্তাকে উদ্দেশে করে লেখা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের নাম একটি ইমেইলে পাঠাতে বলা হয়েছিল। সারা দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় নয়টি কলেজের নাম পরিবর্তনের।

নাম পরিবর্তনকে বড় কাজ উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর এসে এটি করতে পারায় মনে একধরনের প্রশান্তি বইছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীরা সমাজে ‘রাজাকার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এরাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সমাজ দরদি সেজে নিজের কিংবা পরিবারের কারো সদস্যের নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। কিন্তু এখন থেকে এটি আর চলবে না। নাম পরিবর্তনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তিনি বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও স্কুল শাখায় বিএনপি-জমাতপন্থীরা ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে। এদের কারণে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়। চাহিদা মতো তথ্য দেয় না।

দেশের ৯টি কলেজের প্রতিষ্ঠাতারা এলাকায়ও স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত। পাকিস্তান আমলে এরা এলাকায় ‘মুসলিম লীগার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ধনকুবের হওয়ায় এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাধারণত কেউ কোনো কথা বলতে চায় না। বাংলাদেশ জন্ম নেয়ার পর তারা স্ব স্ব এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে ‘সমাজপতি’ বনে যান।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি