বেরোবির ‘চ্যাম্পিয়ন’ ফারুকের গল্প

  • নাসরিন জাহান জয়া, (বেরোবি) রংপুর | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০১৭, ১১:৫১ এএম

তার স্বভাব চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কাঁধে একটা ব্যাগ আর মুখে এক চিলতে হাসি তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে সে চলছে তার মত। হয়ত তার ক্লাসে হয়তবা ক্লাস শেষ করে ফিরে যাচ্ছেন। তাকে দেখলেই মনে হয় মাথা ভরা বুদ্ধি! 

শুধুমাত্র যে কোন একটা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার কথা শুনলেই হয়! কখনও দলবল নিয়ে আবার কখনও বা একা একা গিয়ে হাজির। শুধু হাজির নয়, বেশিরভাগ সময় তাকে দেখা যায় চ্যাম্পিয়ন হতে। চ্যাম্পিয়ন হওয়াই যে তার স্বভাব। শুধু প্রতিযোগিতা নয়,পড়াশোনাতেও তিনি চ্যাম্পিয়ন। ক্লাসে প্রথম ছাড়া তাকে কখনও দ্বিতীয় হতে দেখা যায়না। ছেলেটির নাম ফারুক আহমেদ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। 

ফারুক বর্তমানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিএসই ক্লাব’ এর সাধারণ সম্পাদক। সদা হাস্যোজ্জল ছেলেটির পছন্দের কাজ কম্পিউটারে বসে প্রোগ্রামিং করা এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন বানানো। সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল ইনভেশন ফেয়ার-২০১৭’ তে তরুণ উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ফারুকের দল। তাদের প্রজেক্ট ছিল ‘ইনফ্যান্টওজ’। 

যার পোটেনশিয়াল ইউজারঃ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্ব্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এতে ক্লাস টেস্ট, কুইজ অটোমেশন,  ভার্চুয়ালী কুইজ কন্টেস্ট আয়োজন, শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট কানেক্টীভিটি বিশিষ্ট যেকোণ স্মার্ট ডিভাইস থেকে যেকোন সময় আর্কাইভড লেসন অনুশিলন, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট, ব্রেইন স্ট্রোমিং করার মত কিছু পাজল ও ওয়ার্ড ম্যাচিং গেম রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করবে। তাছাড়া শিক্ষকরা যেকোন জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক স্ট্যাটাস মনিটর করতে পারবেন।

বেরোবিতে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ ফেস্ট-২০১৬’ তে বিভাগীয় পর্যায়ে ‘প্রযুক্তিবিদ্যা’ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয় ফারুকের দল ‘বিআরইউয়ার বাইনারী’। এছাড়াও ‘জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা-২০১ ৫-১৬’ তে মেন্টর হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ফারুক একজন শিক্ষকের সাথে ‘মেশিন লার্নিং’ বিষয়ে গবেষণা করছেন। হ্যকাথন এ দুইবার দুটি অ্যাপস তৈরী করেন তিনি। এরমধ্যে একটি হচ্ছে ‘সেফটি এলার্ম’। যে কোন বিপদজনক রাস্তাতে সামনে কোন ভয়ংকর কিছু পেলে এলার্ম দেয়াই এই মোবাইল অ্যাপসের কাজ। 

অবসর সময়ে বই পড়তে ভালবাসেন ফারুক। বিভিন্ন ধরনের গণিতের বই তার পছন্দের প্রথম তালিকায়। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী তার অনেক পছন্দের। পছন্দের লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এছাড়াও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস তার অনন্য পছন্দের বই। হেলাল হাফিজের কবিতারও বড় ভক্ত ফারুক। তার বাংলা সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করতেও  ভালো লাগে। 
ফারুকের পছন্দের খেলা ক্রিকেট। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট খেলতে ছুটে যান।  ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা একজন ডাটা সাইন্টিস্ট হওয়া। অনার্স শেষ করে দেশের বাইরে গিয়ে এমএস এবং পিএইচডি করতে চান ফারুক। দেশে ফিরে শিক্ষকতা ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজই তার লক্ষ্য।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই