‘আমাদের খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগ করে খাব’

  • রাবি প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭, ১০:১৭ পিএম

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, খাবারের ব্যবস্থা করছেন। মিয়ানমার থেকে আসা এসব শরণার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, আমরাও তাদের পাশে আছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে সবার কাছে আহ্বান জানাবো, প্রয়োজন হলে আমাদের খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাব।’

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সিনেট ভবনের সামনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

উপ-উপাচার্য বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন সেটা দীর্ঘদিনের না হয়ে যেন সাময়িক হয়। শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের মাধ্যমে তাদেরকে যেন নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনযাপনের প্রতি আমাদের সহানুভূতির অভাব নেই। কিন্তু আমাদের সরকারের পক্ষে এতো বিপুল পরিমাণ মানুষকে বেশি দিন বহন করাও কষ্টকর। উন্নত বিশ্ব এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে এখন আমাদের এই দাবি জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রকীব আহমদ বলেন, ‘মিয়ানমার তার অভ্যন্তরীণ সমস্যাকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আমাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। এটি জাতিগত ও মানবিক বিষয়।’

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান এমনকি বৌদ্ধরাও আছে। মানবিক কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজনীতি করছে। এমনকি বাংলাদেশের ভেতরের একটি রাজনৈতিক দল রোহিঙ্গাদের নিয়ে খেলার চেষ্টা করছে এবং সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা বুঝেছেন এবং তিনি দেশ-বিদেশ ঘুরে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। এদেশের সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে সেই শক্তি জোগাবে।’

অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এএসএম রেজাউল করিম বক্শীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার, আইন বিভাগের অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, আইন বিভাগের প্রভাষক শিবলী ইসলাম।

এসময় বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ১০টায় একই দাবিতে মৌনমিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক কেবিএম মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হক, ফলিত রসায়নের অধ্যাপক সি এম মোস্তফা, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক ড. দিল আরা হোসেন, সমাজকর্মের অধ্যপক ড. সৈয়দা আফরীনা মামুন, আরবী বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ, লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি পারভেজ আজহারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে একই দাবিতে বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাহারের সামনে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিবের সভাপতিত্বে এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল বিতর্ক পাঠশালার সভাপতি ওমর ফারুক, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাবেদুল ইসলাম মনি, জুয়েল মামুন, গণযোগাযোগ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম