রাবি শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত

৭ দিন পেড়িয়ে গেলেও গ্রেপ্তার হয়নি হামজার দুই সহযোগী

  • রাবি প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৪, ২০১৮, ১১:১৪ এএম

রাজশাহী : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম হৃদয়কে ছুরিকাঘাতের ঘটনার ৭ দিন পেড়িয়ে গেলেও ছাত্রলীগ কর্মী আবু হামজার দুই সহযোগীকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা ছাত্রলীগ।

গত ১৬ মে বান্ধবীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাইফুলকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত হামজা গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।

ওই দিন ঘটনাস্থলে হামজা স্বীকার করেন, তিনি ছুরি দিয়ে আঘাত করেনি। তার সঙ্গে আরো দুজন ছিল। তারাই ছুরিকাঘাত করেছে। কারা ছুরিকাঘাত করেছে জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন ধমক দিয়ে হামজাকে চুপ থাকতে বলেন এবং পরিচয় জানাতে বাধা দেন। এমনকি হামজাকে নিজের কর্মী হিসেবে অস্বীকার করেন সাদ্দাম।

পরদিন হামজা ও তার অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের আসামী করে থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন আহত সাইফুল। পরে আটক হামজাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় মতিহার থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঘটনায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে হামজা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে এখন অবধি দলীয়ভাবেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এদিকে ঘটনার পরদিন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার। প্রসেনজিৎ দাবি করেন, সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস তাকে জোরপূর্বক তুলে দেন।

ওই দিন বিকেলে একই দাবিতে মানবন্ধন করে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা হামজা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। এ সময় অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।

তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও হামজার দুই সহযোগীর কাউকেই গ্রেপ্তার না করতে পারায় হতাশা ব্যক্ত করেন শাস্তির দাবিতে অবস্থান নেওয়া প্রসেনজিৎ  বলেন, কিছুদিন আগে আমার বন্ধু ময়নুলকে মারধর করা হলো, আবার আমার বিভাগের বড় ভাইকে হত্যাচেষ্টা করা হলো; বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র হয়ে জুনিয়রের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার চেয়ে লজ্জার কিছু নেই। যে শিক্ষার্থী এভাবে ছুরি মারতে পারে সে তো শিক্ষার্থী নয় সন্ত্রাসী। তারা একই সঙ্গে যৌন হয়রানি এবং হত্যাচেষ্টা করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তবুও আজ অবধি তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। হামজা ও তার সহযোগীকে বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান প্রসেনজিৎ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এখন তো ক্যাম্পাস ছুটি তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা করা দরকার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় তো হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন বিষয়টা পুলিশই দেখবে।

হামজার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আই ও নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। খুব দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই