একচল্লিশেও এভারগ্রিন বেবো

  • বিনোদন ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০, ০১:১০ পিএম

ঢাকা : চল্লিশ পেরিয়ে একচল্লিশে পা দিলেন বলিউড অভিনেত্রী ও সাইফ আলী খানের স্ত্রী কারিনা কাপুর খান। আজও যেন চির তরুণী বেবো। বলিউডপাড়ায় তাকে নবাবপত্নী বলেও ডাকা হয়। ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের মা তিনি। স্বামী, সন্তান, পরিবার, কাজ, ভক্ত ও বন্ধুবান্ধব নিয়েই তার জগৎ। নিজেকে পরিচয় দেন ‘গসিপ কুইন’ হিসেবে। জীবনের শেষনিশ্বাস পর্যন্ত কাজ করে যাওয়াই তার ইচ্ছা।

কারিনা কাপুর খানকে বলা হয়, তৈমুরের আম্মু। তার বড় পরিচয়, তিনি একজন অভিনয়শিল্পী। কখনো পতিতা বা শেকসপিয়ারের নাটকের নায়িকা অথবা সমাজকর্মী কিংবা মেডিকেল স্টুডেন্ট, এমন শ খানেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রাণবন্ত অভিনয় দিয়ে বলিউডের মতো তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ সিনে দুনিয়ায় নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন এই অভিনেত্রী। হয়ে উঠেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের শীর্ষস্থানীয় নায়িকাদের একজন। বড় পর্দায় ক্যারিয়ারের শুরু হয় ২০০০ সালে। সে সুবাদে ক্যারিয়ার প্রায় দুই দশক পূর্ণ করতে যাচ্ছেন এ অভিনেত্রী।

অভিষেক বচ্চনের বিপরীতে ‘রিফিউজি’ নামের একটি সিনেমা দিয়ে বলিউডের জমকালো দুনিয়ায় তার পথচলা। এরপর ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘জব উই মেট’, ‘উড়তা পাঞ্জাব’, ‘চামেলি’, ‘ভির দ্য ওয়েডিং’ ও ‘থ্রি ইডিয়টস’সহ বেশ কিছু সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকতে চান অভিনয়ের সঙ্গে। নিজেকে উজাড় করে দিতে চান চরিত্রের প্রয়োজনে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে এমনটিই জনিয়েছেন তিনি।

ক্যারিয়ারের ২০ বছর নিয়ে কারিনা কাপুর বলেন, ‘মনে হচ্ছে এই তো সেদিন শুরু করেছি। এখনো চোখ বন্ধ করলে প্রথমবার নিজেকে বড় পর্দায় দেখার অনুভূতি আন্দাজ করতে পারি। কিন্তু সময়টা দেখতে দেখতে ২০ বছরে গড়িয়ে যাবে, সত্যিই ভাবিনি। আজ এমন সময় দাঁড়িয়ে, যেখানে নিজের কাছেই পুরো বিষয়টি বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। এত লম্বা সময় পাড়ি দিলাম কী করে? এখন মনে হচ্ছে, আমি অভিনয় করার জন্যই জন্মেছি। কারণ, আমার সব আবেগ ও চিন্তা এই অভিনয় ঘিরেই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমি চাইলেও অন্য কোনো কাজে এত ভালো করতে পারতাম না। তাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অভিনয়ের সঙ্গেই থাকতে চাই।’

কারিনা আরো বলেন, ‘পুরো সময়টা উপভোগ্য ছিল। আমি খুবই খুশি, এখন পর্যন্ত যেমন করে চেয়েছি ঠিক তেমনটিই হয়েছে। অভিনেত্রীদের অভিনয় বাদ দিয়ে জীবন চালিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। তাই আমি সারা জীবন অভিনয় করে যেতে চাই। দুই দশকে এসেও বিয়ে ও সন্তান থাকার পরও ভক্তরা আমাকে যতখানি সমর্থন করেন এবং ভালোবাসেন, এটা সত্যিই বিশাল পাওয়া। তাদের জন্যই আজ আমি এখানে। তারাই আমার দীর্ঘায়ু হওয়ার অনুপ্রেরণা।’

সংসার ও কাজের সমন্বয়ের প্রশ্নে জীবনসঙ্গী সাইফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘সাইফ কখনোই আমার কাজের বিষয়ে কথা বলে না। এমনকি আমি কোন ছবিতে অভিনয় করছি, সেই বিষয়েও কখনো নিজে থেকে জানতে চায় না। আমার ব্যস্ততা সম্পর্কেও কখনোই প্রশ্ন করে না। বরং জানতে চায়, কখন আমার সময় হবে, কারণ সে আমার সঙ্গে সময় কাটাতে চায়।’

এবার একটু ক্যারিয়ারের পেছনের দিকে তাকানো যাক। ‘রিফিউজি’ ছবি দিয়ে কারিনার অভিষেক হলেও ব্লকব্লাস্টার ‘কাভি খুশি কাভি গাম’ চলচ্চিত্র দিয়ে বলিউডে শক্ত অবস্থান তৈরি করেন কারিনা। এই ছবির সাফল্যের পর তার কয়েকটি ছবি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। ২০০৪ সাল ছিল তার ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। এই বছর তিনি নাট্যধর্মী ‘চামেলি’ চলচ্চিত্রে যৌনকর্মীর ভূমিকায় এবং ‘দেব’ চলচ্চিত্রে দাঙ্গাকবলিত নারী আলিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করে ফের আলোচনায় আসেন।

২০০৬ সালে উইলিয়াম শেকসপিয়ারের ‘ওথেলো’ নাটক অবলম্বনে নির্মিত ‘ওমরকার’ চলচ্চিত্রে ডলি মিশ্রার ভূমিকায় অভিনয় করেন কারিনা। এ জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৭ সালের ‘জব উই মেট’ চলচ্চিত্রে গীত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ফের ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।

২০১০ সালের ‘উই আর ফ্যামিলি’ চলচ্চিত্রে তার ভূমিকার জন্য ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী পুরস্কার লাভ করেন। এরপর বলিউডের সর্বাধিক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র ‘থ্রি ইডিয়টস’, সামাজিক নাট্যধর্মী ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ চলচ্চিত্রে প্রধান নারী ভূমিকায় অভিনয় করে সাফল্য লাভ করেন। এ ছাড়া তার অভিনীত থ্রিলারধর্মী ‘কুরবান’ এবং ‘হিরোইন’ চলচ্চিত্র দুটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।

এখানে আরো একটি তথ্য দেয়া আবশ্যক। ক্যারিয়ারের এই দুই দশকে কেবল এই ছবিটির জন্যই প্রথম অডিশন দিতে হয় তাকে। হলিউড ক্লাসিক ‘ফরেস্ট গাম্প’র অফিশিয়াল রিমেক। এতে তার সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন ‘মিস্টার পারফেক্টশনিস্ট’ খ্যাত আমির খান। ছবির চিত্রনাট্য করেছেন আতুল কুলকারনি। পরিচালনা করেছেন অদ্বৈত্য চন্দন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই