‘পর্দায় ভিলেন হলেও মিজু ভাই ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ’

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০১৭, ০২:০৭ পিএম

বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খলনায়ক মিজু আহমেদ। হঠাৎই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শ্যুটিংয়ে যাওয়ার পথে গত সোমবার ট্রেনেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে তার চিরচেনা ও ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় কাটানো জায়গা এফডিসিতে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় এফডিসির প্রযোজক সমিতির সামনের খোলা ময়দানে নামাজে জানাজা পড়ান এফডিসির পেশ ইমাম। আর সেখানেই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন সহকর্মী তারকা অভিনেতা অভিনেত্রীরা। তাকে নিয়ে শোক ও কিছুটা স্মৃতিকাতর অভিনেত্রী নূতন। সোনালীনিউজের কাছে দেয়া মিজু আহমেদকে নিয়ে চিত্রনায়িকা নূতনের বক্তব্যটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:  

আমাদের প্রাণপ্রিয় ভাই মিজু আহমেদ সবাইকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছেন। আসলে তার সম্পর্কে বলার এমন কিছু নেই, আবার বলেও শেষ করা যাবে না। উনি এমন একজন মনের মানুষ ছিল সবার, হয়তো উনাকে সবাই ভিলেন হিসেবে দেখেছেন কিন্তু সেটা কেবল পর্দার চরিত্রেই ছিলেন। পর্দায় ভিলেন হলেও মিজু ভাই ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ। 

তার মন মানসিকতা এতো সুন্দর ছিল যে, আমরা যখন একসঙ্গে বসতাম তখন বুঝতে পারতাম যে সে ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করলেও তার মনটা আসলে কতোটা বড়। তারসঙ্গে এতো যুগ ধরে আমার পরিচয়, এতো ছবি তার সাথে আমি করেছি যে ভাষায় বলা যাবে না। তারচেয়ে বড় কথা আমরা একটা ফ্যামিলি ছিলাম। 

আর সবচাইতে দুঃখের কথা হলো এই যে আমাদের ফ্যামিলি থেকে একজন একজন করে আমাদের বড় ভাই চলে যাচ্ছে, ছোট ভাই চলে যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির মাথার মনি ছিল যারা, যারা এই ইন্ডাস্ট্রিটা দ্বার করিয়ে ছিল। তাহলে আমরা কাকে নিয়ে কাজ করবো। কাকে নিয়ে বাঁচবো। যে শিল্পীগুলো ছিল, যাদের থেকে আমরা শিখেছি, অনেক কিছু পেয়েছি। আজকে তাদের এভাবে চলে যাওয়া আমাদের জন্য দারুন বিষণ্নের! শোকের। 

ক’দিন হলো আমি মিজু ভাইয়ের সাথে একটা সিনেমায় কাজ করেছি। শাহাদাৎ হোসেন লিটন পরিচালিত সিনেমার নাম ‘অহংকার’। এই ছবিতে মিজু আহমেদ আমার বড় ভাই চরিত্রে অভিনয় করেছে। এই সিনেমাটি করতে সময় আমার মনে হয়েছে যে, সে আসলেই আমার বড় ভাই। বাস্তবেও তিনি সত্যি ছিলেন আমার বড় ভাই। শুধু আমার না, ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যেকের সাথে খুব চমৎকার আচরণ করতেন তিনি। বড় মনের মানুষ ছিলেন। 

আসলে তার হঠাৎ চলে যাওয়া আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। ভাবতেই পারছি না যে তার মৃত্যু হয়েছে। উনি কি আসলেই চলে গিয়েছেন নাকি কোথাও শ্যুটিংয়ে আছেন, এরকম মনে হচ্ছে একজন শিল্পী হিসেবে। দুদিন আগেও মিজু ভাইয়ের সঙ্গে বসে চা খেয়েছি, গল্প করেছি, বেশ জমিয়ে আড্ডা দিয়েছি। কিন্তু কখনোই মনে হয়নি যে দুদিন পরেই মারা যাবেন তিনি। উনার মতো একজন গুণী শিল্পী ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে চলে গিয়েছেন, এটা আমাদের জন্য বড় ক্ষতির। এ ক্ষতি পূরণ আর কার দ্বারা সম্ভব আমি জানি না। কারণ এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমি অনেক বছর ধরে আছি, অনেক ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছি। আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ রইলো, মিজু  ভাই আমাদের ছেড়ে যেখানে চলে গিয়েছেন সেখানে যেন উনি শান্তিতে থাকুন। তার আত্মার শান্তি কামনায় সবাই আল্লার কাছে প্রার্থনা করবেন।      

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিএল