পাড়ার গৌরাঙ্গ থেকে বলিউডের ডিস্কো ড্যান্সার

  • বিনোদন ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০১৭, ০৪:১৫ পিএম

ঢাকা : শুধু বাংলার নয় পুরো ভারত বর্ষের একজন খ্যাতিমান অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। পাড়ার গৌরাঙ্গ থেকে তিনি বলিউড কাঁপানো ডিস্কো ড্যান্সার। কোঁকড়া চুলের রাগী চেহারার এই যুবক পা রাখলেন ৬৭তম বর্ষে। এভারগ্রিন এই গুণী অভিনেতাকে ঘিরে তাই আজ কিছু তথ্য।   

জন্ম ১৯৫০ সালের ১৬ জুন বরিশালে। নাম গৌরাঙ্গ। পরবর্তীকালে কলকাতায় গিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকেও ডিগ্রি নেন।

ছাত্রজীবনে অনুপ্রাণিত ছিলেন নকশাল আদর্শে, ঘনিষ্ঠতা ছিল প্রথমসারির নেতাদের সঙ্গেও। কিন্তু দাদার আকষ্মিক মৃত্যু পাল্টে দেয় জীবনের গতিপথ। আন্দোলন ছেড়ে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। যদিও এর জন্য আজও ঝুঁকিপূর্ণ তার জীবন। 

অভিনেতা-রাজনীতিক-ব্যবসায়ীর পাশাপাশি তিনি উজ্জ্বল এবং সক্রিয় সমাজকর্মীর ভূমিকায়ও। নিয়মিত‚ স্বচ্ছ ও সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবেও প্রশংসিত হয়েছেন একাধিকবার।

১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘মৃগয়া‘তেই বাজিমাত। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার। এরপর অক্ষরিক অর্থেই তার মৃগয়াভূমি হয়ে উঠেছিল বলিউড। মেরা রক্ষক‚ সুরক্ষা‚ প্রেম বিবাহ‚ তারানা… একের পর এক সুপারহিট ছবি।

আটের দশকে বলিউডে রাজত্ব করেছেন তিনি। ১৯৮২ সালে মাইলফলক ছবি ডিস্কো ডান্সার। আজও হটকেক মিঠুন স্টাইলের নাচ। চলতেই থাকে মারকাটারি বক্স অফিস। প্যার ঝুকতা নহি‚ হাম পাঁচ‚ মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে‚ ঘর একমন্দির‚ প্যার এক মন্দির… শেষে এমন অবস্থা হয় তার, নিজের ছবির জন্য মার খেত নিজের টাকায় বানানো অন্য ছবির ব্যবসা। ১৯৮৯ সালে এক বছরেই রেকর্ড সংখ্যক তার ১৯টি ছবি মুক্তি পায়।

এসবের মাঝেই ১৯৯২ সালে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ছবি ‘তাহাদের কথা’ এনে দিল সেরা অভিনেতা বিভাগে দ্বিতীয় জাতীয় পুরস্কার। ১৯৯৮ সালে জি ভি আইয়ার পরিচালিত স্বামী বিবেকানন্দ ছবিতে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভূমিকায় অভিনয় করেও তৃতীয় জাতীয় পুরস্কার পান। এবার সেরা সহ-অভিনেতা।

হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করলেও টালিগঞ্জকে বঞ্চিত করেননি। ‘তাহাদের কথা’ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য সিনেমা হল ‘তিতলি’‚ ‘শুকনো লঙ্কা’‚ ‘নকশাল’, ‘এক নদীর গল্প’, ‘ফাটাকেস্ট’ সিরিজ।

অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসাও করেছেন চুটিয়ে। দেশের একাধিক শহরে রমরমিয়ে চলছে তার হোটেল। আছে ফিল্ম প্রোডাকশন। বাংলা টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো-য়ের মেরুদণ্ড শক্ত করতেও তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

সহ-নায়িকা যোগিতা বালিকে ১৯৭৯ সালে বিয়ে করেন। তার আগে সাতের দশকে চুটিয়ে প্রেম করেছেন অভিনেত্রী সারিকার সঙ্গে। এই সম্পর্ক ভাঙতেই মডেল হেলেনা লিউকের সঙ্গে প্রণয়। বিবাহিত মিঠুনের প্রেমে পড়েছিলেন শ্রীদেবী। শোনা যায় দুজনে বিয়েও করেছিলেন। পরে সেই সম্পর্ক ভেঙে মিঠুন ফিরে আসেন স্ত্রী যোগিতার কাছে।

মিঠুন-যোগিতার তিন ছেলে- মহাক্ষয়‚ উমেশি ও নমশি। একমাত্র মেয়ে দিশানী, যাকে তিনি দত্তক নিয়েছিলেন কলকাতায় পূজা উদ্বোধন করতে এসে। পথের ধারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল সদ্যোজাত এই কন্যাকে।

প্রথম জীবনে বামনেতাদের ঘনিষ্ঠ এই অভিনেতা পরে রাজ্যসভায় তৃণমূল মনোনীত সাংসদ। পরে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় পদত্যাগ করেন শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে।

সোনালীনিউজ/ এসও