মানবিক বিপর্যয়ে ব্যথিত তারকারা

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭, ০৪:৩৬ পিএম

ঢাকা: ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু, মানষ মানুষের জন্য।’ ভুপেন হাজারিকার এই গানটি আজও মনে করিয়ে দিচ্ছে মানবতার কথা।

ক্ষমতাসীন মানুষের বর্বর আচরণে মানুষ আজ নির্যাতিত-অসহায়। এই সংঘাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু-নারী-পুরুষ। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত দমন-পীড়ন থেকে জীবন বাঁচাতে ভিটেমাটি ছেড়ে রোহিঙ্গারা আজ শরণার্থী।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিচ্ছে বাংলাদেশে। মিয়ানমার বিষয়ে বিশ্ববিবেক যেন অন্ধ হয়ে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা যেন ডাঙায় বাঘ, নদীতে কুমির আর মাঝখানে তারা। পৃথিবীর সব মানুষের কান্নার শব্দ এক। স্বজন হারানোর ব্যথাও সবার এক। তা হলে কেন মানুষে মানুষে এই হানাহানি। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতনে ব্যথিত আমাদের শোবিজের তারকারাও।

শাকিব খান

মানুষের প্রতি মানুষের মায়া-মমতা কমে যাচ্ছে দিন দিন। রাস্তায় কেউ আক্রান্ত হলে আমরা পাশে দাঁড়াই না। কারো বিপদে সাহায্য করতে চাই না। এসব নমুনা এখন পুরো পৃথিবীতে। মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। কিন্তু আচরণ করছে শত্রুর মতো। তাদের দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের বের করে দিচ্ছে। শুধু বেরই করে দিচ্ছে না, অনেক রোহিঙ্গাকে হত্যা করছে। বাদ পড়ছে না শিশুরাও। এমন বর্বরতার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সৈয়দ আবদুল হাদী

রোহিঙ্গা সম্পর্কে আলাদা করে বলার কিছু নেই। এত বড় একটা মানবিক সমস্যা। এটি তো গণহত্যা। একাত্তরে আমাদের ওপর যে গণহত্যা হয়েছে, তাদেরটাও একই। তারা হিন্দু না মুসলমান এটি বড় কথা নয়। তারা মানুষ, এটিই তাদের বড় পরিচয়। তারা যে কোনো ধর্মের হোক না কেন প্রাণের ভয়ে আমাদের এখানে আশ্রয় নিতে চাচ্ছে, আমরাও তাদের আশ্রয় দিচ্ছি মানবিক কারণে। এত বড় একটা মানবিক বিপর্যয়ের পর বিশ্বনেতারা কেন চুপ করে আছেন? তারা অবশ্যই চাপ দিতে পারতেন মিয়ানমারকে। যেখানে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির মতো একজন ব্যক্তি আছেন। তিনি তো শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, কী ধরনের রসিকতা এটি? শান্তিতে নোবেলপ্রাপ্ত নারীর দেশে এখন এই অবস্থা হচ্ছে, এটি হাস্যকর। এটি একটি রসিকতা। বিশ্ববিবেক কি জাগবে না?

ওমর সানী

প্রথমেই শুরু করি হিটলারকে দিয়ে। লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে হিটলার, কিন্তু লাশের বিভৎসতা এতো দেখা যায়নি। তারপর আসেন লেলিন, মুসোলিন, মাঝখানে পৃথিবীতে আরো অনেকের নামই এসেছে। পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভূট্টু তার বিভৎসতা আমরা ছবিতে দেখেছি এবং বাস্তবেও অনেকে দেখেছেন। আপনারা আমার সাথে একমত হবেন কিনা, তা আমি জানি না। আমার জানা মতে সবার আগে হত্যা, নৃশংসতা, বিভৎসতায় সব চেয়ে এগিয়ে আছেন ‘সু চি’। বিশ্ব মুসলিম এবং অন্য ধর্মের সবাই এই রোহিঙ্গাদের বাচাঁবার জন্য জিহাদী যুদ্ধ বলেন, বিবেকের যুদ্ধ বলেন, মানবতার যুদ্ধ বলেন সব যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আমরা তখনি হাসবো, যখন এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে। ধিক্বার ধিক্কার ধিক্কার জানাই এই মানব হত্যাকারী রক্ত পিপাসু ‘সূ চিকে’।

খুরশীদ আলম

এই সমস্যা শুধু আমাদের একার নয়। পুরো পৃথিবীর জন্যই বিরাট সমস্যা। সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনা। সমাধানের জন্য আমাদের নেতারা চেষ্টা করছেন। আমরা শান্তি চাই। এই অশান্তি যাতে করে কেটে উঠতে পারি সে জন্য সারা পৃথিবীর রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি আহ্বান জানাব। আমাদের আশ্রয় দেওয়া আদৌ উচিত না অনুচিত সেটি সরকার ভালো-মন্দ বুঝবে। কে রোহিঙ্গা, কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বাঙালি সেটি বড় কথা নয়। আমরা সবাই মানুষ। একাত্তরে আমরা যখন বিপদে পড়েছিলাম, তখন ভারত আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমাদের সবারই উচিত একত্রে সহযোগিতা করা।

প্রিন্স মাহমুদ

মিয়ানমারে সম্মান ও অধিকার নিয়ে বসবাস করার ক্ষেত্র তৈরিতে রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে এই মুহূর্তে কী করণীয় তা ভাববে ‘বিশাল-চওড়া’ মানুষগুলো, আমি নই। থেঁতলে যাওয়া অনুভূতিতে কিছু ফিকশন, আর কিছু নন-ফিকশন বলে মনে হয় মানুষ হচ্ছে বিনোদন, মানুষের থেকে বড় কোনো বিনোদন এই পৃথিবীতে নেই। বীভৎস, অমানবিক, হিংস্রতার শিকার চেহারাগুলোর দিকে তাকিয়ে প্রতিবারই কিছুক্ষণ উহ-আহর পর, চাপমুক্ত থাকার সহজ কিছু টিপস নিয়ে দৈনন্দিন সমস্ত কাজ করি এবং নিয়মমাফিক ঘুমাতে যাই...

ফেরদৌস

আধুনিক পৃথিবীতে মানবতার জয়গান গাইতে চায় সবাই। কিন্তু মানবতার কাছে হার মানছে অনেক কিছু। মানুষ মারছে মানুষকে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে জঘন্য নির্যাতন হচ্ছে মানুষের ওপর। শুধু নির্যাতন নয়, এ জন্য মানবতার পরাজয়। আমাদের দেশের মাটিতে লাখো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। অথচ একটি দেশ থেকে মৃত্যু ভয়ে পালিয়ে আসছে। পুরো বিশ্ব চেয়ে চেয়ে দেখছে। মানুষ কেন এমন হয়?

সোনালীনিউজ/বিএইচ