শাকিবের ছবির জন্য খুলছে বন্ধ হওয়া অর্ধশত হল!

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৪, ২০১৮, ০১:৪৩ পিএম
শাকিব খান

ঢাকা: শাকিব খানের সিনেমা মানে সুপার হিট, বাম্পার, হাউজফুল।  আসন্ন ঈদে মুক্তি পাচ্ছে শীর্ষ এই নায়কে একাধিক নতুন ছবি। এ উপলক্ষে দেশে খুলছে বন্ধ হওয়া  প্রায় অর্ধশত সিনেমা হল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দীন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জল। 

তারা বলেন, এতে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ প্রতি ঈদেই মৌসুমি সিনেমা হল হিসেবে এভাবে অনেক বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হল খুলে থাকে। কারণ ঈদে মানসম্মত ছবি মুক্তি পায় ও কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা হয়। দুঃখের বিষয় হলো ঈদ শেষে পর্যাপ্ত, মানসম্মত ও জনপ্রিয় ছবির অভাবে লোকসান গুনে ঈদে খোলা সিনেমা হলগুলো আবার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সংশ্লিষ্ট মালিকরা। 

ভালো ছবির অভাব ছাড়াও সরকারের কাছ থেকে শিল্পের সুবিধা না পাওয়া সিনেমা হল বন্ধের আরেকটি কারণ। প্রদর্শক সমিতির এই দুই কর্মকর্তা একমত পোষণ করে বলেন, সিনেমা হল বাঁচলে চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচবে। তাই সরকারিভাবে শিল্প ঘোষণা করা চলচ্চিত্র ও সিনেমা হলকে শিল্পের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সরকারকেই দিতে হবে। না হলে চলচ্চিত্র এবং সিনেমা হল বলে আর কিছু থাকবে না।

মিয়া আলাউদ্দীন ও আওলাদ হোসেন উজ্জল জানান, দেশে থাকা প্রায় ১৩০০ সিনেমা হল মানসম্মত ও পর্যাপ্ত ছবির অভাবে ২০০০ সালের শুরু থেকে বন্ধ হতে হতে এখন ২৭৪টিতে এসে ঠেকেছে। যেগুলো চালু আছে সেগুলো চরম লোকসানের কবলে বন্ধের ধারাবাহিকতায় রয়েছে। ঢাকার বাইরে মফস্বলের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। 

সিনেমা হলের দৈন্যদশার আরেকটি প্রধান কারণ হলো সরকার চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করার পর কথা ছিল সিনেমা হলের বিদ্যুৎ বিল শিল্পের সুবিধায় নেওয়া হবে। কিন্তু শিল্প ঘোষণার প্রায় ৬ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবেই বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল নেওয়া অব্যাহত রেখেছে সরকার। এতে এই লোকসানি সিনেমা হল আরও ক্ষতি ও হয়রানির মুখে পড়েছে। 

প্রদর্শক সমিতির কর্মকর্তারা আরও বলেন এসব কারণে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ২৫টি জেলা এখন সিনেমা হল শূন্য। এসব জেলার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে— নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, মৌলভীবাজার, মুন্সীগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার।

সিনেমা হল মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সিনেমা হল সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য গত ১০ বছর ধরে সরকারি উদ্যোগের কথা থাকলেও তা এখন পর্যন্ত মুখের কথাতেই সীমিত আছে। কখন আলোর মুখ দেখবে তা অজানা। মিয়া আলাউদ্দীন ও উজ্জ্বল বলেন সম্প্রতি সরকার আবারও সিনেমা হল সংস্কার ও এতে আধুনিক প্রজেক্টর স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও তা নানা মত আর মিটিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আদৌ তা বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

তা ছাড়া জেলা শহর এই প্রকল্পের আওতায় পড়বে কিনা তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারিভাবে সিনেমা হল আধুনিকায়নে গঠিত কমিটির সদস্য এফডিসির কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, আমরা দ্রুত ও সেরা কাজটি করার চেষ্টা করছি। যদিও সিনেমা হল মালিকদের নানা মত রয়েছে তারপরেও সবার মতকে প্রাধান্য দিয়ে একটি প্রকল্পপত্র তৈরি করা হয়েছে। এটি শিগগিরই তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।সরকার শিগগিরই প্রকল্পটি পাস করবে এবং এতে করে সিনেমা হল বন্ধ রোধ ও ঈদে মৌসুমি সিনেমা হল বলে আর কিছু থাকবে না।

সোনালীনিউজ/বিএইচ