একই জমিতে পেঁপের পাশাপাশি আলু চাষ

  • দিনাজপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ০৩:২৫ পিএম
কৃষক বাবলু মিয়া

দিনাজপুর: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের কৃষক বাবলু মিয়া (৫৫)। নিজস্ব দেড় বিঘা জমিতে আলু এবং পেঁপে চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে ক্ষেতে আলু গাছ বের হয়েছে। পেঁপে গাছ গুলো বড় হতে শুরু করেছে। সমন্বিত পদ্ধতিতে সাথী ফসলের চাষাবাদ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার বারাইপাড়া গ্রামের সৌখিন এই চাষি।

বাবলু মিয়া উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের মৃত সাগর ইসলামের ছেলে। তিনি দেড় বিঘা জমিতে সম্পূর্ণ জৈবিক পদ্ধতিতে নিজস্ব উৎপাদিত কম্পোস্ট সার দিয়ে একই জমিতে আলু এবং পেঁপে চাষাবাদ করেছেন। গত বছর ১৫ লাখ টাকা মূল্যে তিনি এই দেড় বিঘা জমি ক্রয় করে চাষবাদ শুরু করেন। ইতো মধ্যে গাছ বড় হতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকা তিনি খরচ করেছেন। আলু এবং পেঁপের ফলন থেকে তাঁর প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় হবে বলে তিনি আশা করেন। একই জমিতে পরিকল্পিতভাবে সাথী ফসল উৎপাদনের সুবিধা গ্রহণ করে সমন্বিত চাষাবাদের মাধ্যমে অধিক ফলন ও লাভ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

নিজ জমিতে কৃষক বাবলু মিয়া

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বারাইপাড়া এলাকার ছোট যমুনা নদীর পাশে সৌখিন কৃষক বাবলু মিয়া তার দেড় বিঘা জমিতে পলি মাটিতে সবুজ চারায় স্বপ্নের বাগান গড়ে তুলেছেন। পুরো জমিতে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়েছে সাদা পাটনাই জাতের আলু এবং এর ফাঁকে ফাঁকে উন্নত জাতের ৩৭৫টি পেঁপে গাছ সারি সারি ভাবে লাগানো হয়েছে। সেখানে তিনি ফসল পরিচর্যা করছেন। এই চারা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠছে বাবলু মিয়ার বাগান। বাগান চাষে তিনি কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে এর পরিবর্তে তিনি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করেছেন। যা তিনি নিজস্ব প্রজেক্টের একটি প্লান্টে গোবর ও আবর্জনা দিয়ে উৎপাদন করেছেন। 

বাবলু মিয়া বলেন, এই জমিতে প্রথমে আলু রোপন করার পর দেখি কিছু জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে, তাই জায়গাটি কাজে লাগাতে এর ফাঁকে ফাঁকে পেপে গাছ লাগিয়েছি। এতে একই জমিতে দুটি ফসল হবে জায়গাটিও কাজে লাগবে। অন্যের জমিতে এধরণের চাষাবাদ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজস্ব চিন্তা থেকে সমন্বিত চাষাবাদ করেছি।

নিজ জমিতে কৃষক বাবলু মিয়া

বাবলু মিয়া আরোও বলেন, আমার বাগানে এখন ধীরে ধীরে আলুর গাছ বেড়ে উঠছে পাশাপাশি বেড়ে উঠছে পেঁপে গাছ। আগামী তিন-চার মাস পর এক একটি পেঁপে গাছে ৫০-৮০ কেজি পর্যন্ত পেঁপে ধরা দেবে বলে আশা প্রকাশ করছি। এই কৃষি প্রকল্প এলাকার শিক্ষিত বেকার যুব সমাজের জন্য মডেল উদাহরণ বলে আমি মনে করি। আমার দেখাদেখি গ্রামের অনেকেই এই সাথী ফসলের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

পাশ্ববর্তী গ্রামের মকছেদুল বলেন, বাবলু মিয়ার দেখাদেখি আমিও ১ বিঘা জমিতে সাথী ফসলের প্রস্তুতি নিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. রুম্মান আক্তার বলেন, কৃষিতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সঠিকভাবে চাষাবাদ করা হলে কৃষি থেকে কৃষকের ভাগ্য বদল হতে পারে। উপজেলার এই উর্বর মাটির সঙ্গে মিশে আছে সোনালি সম্ভাবনা। এর সঠিক ব্যবহারে কৃষিতে সোনা ফলবে। কৃষক যাতে করে রোগ বালাই মুক্ত ফসল ফলিয়ে লাভবান হতে পারেন, সেদিক খেয়াল রেখে সবসময় তাদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। 

সোনালীনিউজ/পিএস/এসআই