বিশ্বে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পরকীয়া!

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬, ০৬:৫৭ পিএম

সোনালীনিউজ ডেস্ক

বিশ্বে দেশে দেশে পরকীয়া সম্পর্কের চিত্র ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি পরকীয়া নিয়ে কয়েকটি গবেষণায় এমনটাই জানা গেছে। গবেষনায় জানা গেছে, সমাজে নারী-পুরুষের বড় একটি অংশ নানাভাবে এ ধরণের অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। আর এ পরকীয়া সম্পর্ক তৈরিতে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অ্যাপ।

গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, নারী-পুরুষ উভয়ে এ সম্পর্ক জড়ালেও নারীরা বিষয়টি একান্তই গোপন রাখার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে অনেক পুরুষ তা বুক ফুলিয়ে স্বীকার করেন। এজন্য অবশ্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে দায়ী করেছেন সমাজতাত্ত্বিকরা।

মিশরের এক টিভিতে টক-শো অনুষ্ঠান চলাকালীন একজন অতিথি আলোচনার মাঝখানে হঠাৎ করেই মন্তব্য করে বসেন যে, মিশরের অন্তত ৩০ ভাগ নারী পরকীয়ার সাথে জড়িত। এ নিয়ে সারা দেশে এতটাই হৈচৈ শুরু হয় যে সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানটিকে ১৫ দিনের জন্য বন্ধ রাখে।

কিন্তু বিশ্বের নানা দেশে পরকীয়ার চিত্রটা আসলে কেমন? এ ধরনের ঘটনা কতটা স্বাভাবিক? পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন কারা বেশি – নারী না পুরুষ?
গবেষণা বলছে, পশ্চিমা বিশ্বে স্বামীরাই স্ত্রীদের ঠকান বেশি।

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাসহীনতার বৈজ্ঞানিক পরিমাপ করা কঠিন কাজ। কারণ, প্রায় সব দেশেই পরকীয়া সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য আচরণ। কোন কোন দেশে একে রীতিমতো অপরাধ বলেই মনে করা হয়।

কিন্তু ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রে চালানো গবেষণায় জানা গেছে, স্বামীরা স্ত্রীদের চেয়ে বেশি পরকীয়া করেন।

২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সোশাল সার্ভেতে জানা গেছে, বিবাহিতদের মধ্যে স্ত্রীকে লুকিয়ে অন্য নারীর সাথে সেক্স করেছেন এমন পুরুষের সংখ্যা নারীদের চেয়ে দ্বিগুণ।

ব্রিটেনে ২০০০ সালের এক গবেষণা দেখা গেছে, একই সাথে একাধিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন ১৫% পুরুষ। অন্যদিকে, নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৯%।

ফ্রান্সের ইন্সটিটিউট অফ পাবলিক ওপিনিয়নের জনমত জরিপে জানা গেছে, প্রায় অর্ধেক (৫৫%) ফরাসী এবং ইতালিয়ান পুরুষ স্বীকার করেছেন যে জীবনের কোন এক সময় তারা জীবনসঙ্গীকে ঠকিয়ে অন্যের সাথে সম্পর্কে করেছেন।

ওই একই জরিপে ৩৪% ইতালিয়ান নারী এবং ৩২% ফরাসি নারী একইভাবে পরকীয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

মানুষের যৌন আচরণ সম্পর্কে জানতে কনডম প্রস্তুতকারী কোম্পানি ডিউরেক্স ২০০৫ সালে একটি বিশাল জনমত জরিপ চালায়। এই জরিপে ৪১টি দেশে মোট ৩,১৭,০০০ মানুষের মতামত নেয়া হয়।

জরিপে জানা যায়, পরকীয়ার কথা স্বীকার করে এমন পুরুষের সংখ্যা তুরস্কে বেশি। অন্যদিকে ইসরায়েলের পুরুষরা পরকীয়া করলেও সেটি স্বীকার করতে একবারেই নারাজ।

ব্রিটেনের অধিবাসীদের যৌনতা এবং জীবনযাপন পদ্ধতির ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার নাম ন্যাটসা।

এর প্রধান বিশ্লেষক ড. ক্যাথরিন মার্সার বলছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীরা অবশ্য পরকীয়ার কথা স্বীকার করেন কম। যৌন আচরণের প্রশ্নে নারীদের প্রকাশ যে ভিন্ন সে কারণেই এমনটা হয় বলে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। নিজের স্বামীকে লুকিয়ে পর পুরুষের সাথে প্রেম করেছেন, একথা তারা মোটেই প্রকাশ করতে চান না। যৌন সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বয়সও একটা বড় ভূমিকা পালন করে বলে তিনি জানান।

গড়পড়তা পুরুষরা তাদের চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়। তিনি ব্যাখ্যা করছেন, ধরে নিন, যে পুরুষ তার চেয়ে কম বয়সী অবিবাহিত নারীর সাথে সম্পর্ক করছে, সে কিন্তু তার স্ত্রীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। কিন্তু তার কম বয়সী সঙ্গিনীর জন্য সেটা কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা হচ্ছে না। সূত্র: বিবিসি


সোনালীনিউজ/ঢাকা/মে