ফেসবুক প্রেম

চাষীকে বিয়ে করে মার্কিন পার্টিগার্ল এখন আদর্শ গৃহবধূ

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০১৭, ০২:১২ এএম

ঢাকা : জিন্স-টি শার্ট ছেড়ে সালোয়ার কামিজ পরে মাথায় ওড়না দিয়ে ঘরের কাজ করেন ৪৪ বছর বয়সী মার্কিন পার্টিগার্ল আদ্রিয়ানা পেরেল। কারণ তিনি ক্যালিফর্নিয়ার রঙিন নৈশজীবন ছেড়ে হাত ধরেছেন এক কৃষকের। তাও আবার নিজের দেশ ছেড়ে অন্য এক অচেনা দেশে। বিয়ে করেছেন ফেসবুক-প্রেমিক মুকেশ কুমারকে। যে কি-না তার চেয়ে প্রায় ১৬ বছরের ছোট, এক কথায় ছেলের বয়সী। কারণ আদ্রিয়ানার ২৮ বছর বয়সী একটা মেয়ে রয়েছে। 

এক মিউচুয়াল বন্ধুর মাধ্যমে ২০১৩ সালে মুকেশের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় আদ্রিয়ানার। চলে চ্যাটিং, কয়েকদিন পরই ফোনে কথা। প্রথম ফোনেই আদ্রিয়ানাকে প্রেম নিবেদন করেন মুকেশ। প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত মার্কিন ওই নারী। কিন্তু ক্রমশ বুঝলেন মুকেশ সিরিয়াস। শেষে আদ্রিয়ানা একদিন বুঝতে পারলেন ভারতীয় এই প্রেমিককে ছেড়ে থাকা অসম্ভব। পরিচিতরা তাকে বোঝালেন‚ আসলে মুকেশ ফেসবুকে নকল পরিচয় নিয়ে তার সঙ্গে চিটিং করছে। কিন্তু মানতে চাইলেন না আদ্রিয়ানা। ২৫ বছরের মেয়ে লুসিকে দেশে রেখে চলে এলেন ভারতে।

২০১৩ সালের আগস্টে দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে মুকেশ ও আদ্রিয়ানার প্রথম দেখা। এর কয়েক মাস পরই হিন্দু মতে বিয়ে করলেন দুজন। এখন আদ্রিয়ানা স্বামী‚ শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন হরিয়ানার অজপাড়া গ্রাম পোপরানে। আদর্শ গৃহবধূ হয়ে সব গৃহকর্মই সারেন নিপুণ ভাবে। কেউ দেখে বুঝতেই পারবে না যে, আদ্রিয়ানা একজন মার্কিন নারী। লাকরির চুলায় রান্না থেকে শুরু করে ঘর ঝাঁড়ু দেয়ার কাজ সব তিনি নিজেই করেন। 

প্রথমে সমস্যা হলেও এখন এই জীবনে পরম সুখি আদ্রিয়ানা। এই গ্রামকে তিনি আপন করে নিয়েছেন। তাই তিনি এ জীবন ছেড়ে কোথায়ও যাবেন না বলে জানান। তবে মাঝে মাঝে মন উতলা হয়ে উঠে মেয়ে লুসির জন্য। বিদায় জানানোর সময়ে দুজনেই খুব কেঁদেছিলেন।

মেম পুত্রবধূকে নিয়ে খুশি ৭০ বছরের শাশুড়িও। বললেন‚ সে যেভাবে আমার সেবা করে সেটা হয়তো ভারতীয় কোনো নারী করবে না। 

আদ্রিয়ানা এখনও ভালো করে হিন্দি বলতে পারেন না। মুকেশও ইংরেজি বলেন ভাঙা ভাঙা। তারপরও তাদের প্রেম ভাষার ব্যবধানে আটকায়নি, বর্ণহীনও হয়নি। 


সোনালীনিউজ/ এসও