দ্বীপ কুকরি-মুকরির অতিথি ওরা

  • ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন, ভোলা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭, ০১:২৪ পিএম

ভোলা: জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান ‘দ্বীপকন্যা’ খ্যাত চর কুকরি-মুকরির। শীত এলেই দেশি বিদেশির পর্যটকদের আগমনে মুখোরিত হয়ে উঠে দেশের তৃতীয় বৃহৎ এই পর্যটন কেন্দ্র। এখানে শীতে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হলো অতিথি বা পরিযায়ী পাখি।

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে চরফ্যাসন উপজেলার আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। পাখি কিচিরমিচিরে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো দ্বীপ। 

প্রতিবছরের মতো এবারো শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে কুকরি-মুকরির ম্যানগ্রোভ ও লেকগুলোতে আসতে শুরু করেছে পাখি। গত সপ্তাহ থেকেই পাখি আসা শুরু করেছে। 

কুকরি-মুকরি ছোট-বড় ১০ থেকে ১২টি লেক গভীর ম্যানগ্রোভ থাকলেও পাখি আসে মূলত চারটি স্থানে। এগুলোকে পাখির জন্য অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদ।

ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক হাসেম মহাজন জানান, ‘অতিথি পাখিদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য ওই চারটি লেককে আমরা অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছি।’

এ বছর এখন পর্যন্ত দেশীয় সরালি নামের হাঁসজাতীয় পাখির দেখা মিলেছে। বাকি লেকগুলোতে এখনো পাখি আসতে শুরু করেনি।

পাখি বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সরালি আমাদের দেশীয় প্রজাতিরই পাখি। এরা সাধারণত দেশের উত্তরাঞ্চলের চর ও হাওর-বাওরে বাস করে।’ এদের অতিথি পাখি বলতে নারাজ তারা।

চেয়ারম্যান প্রভাষক হাসেম মহাজন বলেন, কুকরি-মুকরিতে যে পাখিগুলো আসে এগুলোর অধিকাংশই আমাদের দেশীয় হাঁসজাতীয় পাখি। অল্প কয়েক প্রজাতির বিদেশি পাখিও আসে। তবে তারা আসে ডিসেম্বর শেষে। এখন যে পাখিগুলো এসেছে এগুলো সরালি। এরা সাধারণত বাংলাদেশের হিমালয়ের কাছাকাছি দূরত্বের জেলাগুলো ও হাওর-বাওরে বাস করে। কুকরি-মুকরিতেও এদের ডিম পাড়া ও বাচ্চা ফোটানোর ঘটনা ঘটেছে। এদের অতিথি বা পরিযায়ী পাখি বলা যায় না। হয়তো কুকরি-মুকরির জন্য অতিথি বলা যেতে পারে।

বেগম রহিমা ইসলাম অনার্স কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক শারমিন আক্তারের গবেষণার তথ্যমতে, কুকরি-মুকরিতে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম অতিথি পাখি আসে। তখন ৯৮ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। বর্তমানে ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ১২৬টি দেশীয় প্রজাতির এবং ৬৯টি বিদেশি।

পাখি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কুকরি-মুকরিতে পাখি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিবছর অসখ্য পাখি প্রেমী পর্যটক আসেন। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই