থাই পেয়ারার বাম্পার ফলন

  • ঝালকাঠি প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০১৮, ০১:৫৫ পিএম

ঢাকা : ঝালকাঠিতে বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে ওঠা থাই পেয়ারার বাগানগুলো এখন থোকা থোকা পেয়ারার ভারে নুয়ে পড়েছে। সারি সারি পেয়ারা গাছের সবুজ পেয়ারা এখন পরিপক্ক হয়ে সাদা রং ধারন করেছে। এ বছর পেয়ারার বাম্পার ফলনে খুশি বাগান মালিকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। আগে থেকেই দেশি পেয়ারা চাষে সুনাম রয়েছে ঝালকাঠির চাষিদের। এবার থাই পেয়ারা চাষেও ব্যপক সাফল্য পেয়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে ও পতিত জমিতে থাই পেয়ারা চাষে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে। জেলার চার উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত থাই পেয়ার বাগান রয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের গাবখান নদী তীরবর্তী শিরযুগ এলাকায় রয়েছে সবচেয়ে বড় বাগানটি। এখানে ৪০ বিঘা জমির ওপরে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন পেয়ারা বাগানটি এখন এলাকাবাসীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।

এছাড়া বিনয়কাঠি ইউনিয়নের মানপাশা এলাকায় ২০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে আরো একটি বাগান। গত দুই বছর আগে ৬০ বিঘা জমিতে ১৫ হাজার  থাই পেয়ারর চারা রোপন করেন চার উদ্যোক্তা। এসব বাগান এখন টসটসে থাই পেয়ারায় পরিপূর্ন। ঝালকাঠিতে সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উচ্চ শিক্ষিত চার যুবক বাগান দুটি গড়ে তোলেন। তারা হলেন, সাবেক ছাত্রনেতা লস্কর আশিকুর রহমান দিপু, প্রভাষক মো. কামাল হোসেন, প্রভাষক গোলাম মুর্তুজা ও আইনজীবী সোহেল আকন।

বাগান মালিক আশকুর রহমান দিপু জানান, ‘জমি সংগ্রহ করে বাগান তৈরী, পরিচর্যা ও পেয়ারা সংগ্রহ করে বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে আমাদের। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমাদের বাগানে যে পরিমান ফল রয়েছে তার বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় দেড় কোটি টাকা। পেয়ারগুলো ৩-৪ ধাপে সংগ্রহ করে বিক্রি করা হবে। এখানে স্থানীয় ২২ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা ভবিষ্যতে বাগান সম্প্রসারন করে আরো বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি যারা বাগান করতে আগ্রহি তাদেরকেও পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।’

বাগান মালিক গোলাম মুর্তুজা জানান, ‘দেশি পেয়ারা মূলত বর্ষা মৌসুমের ফল। তবে থাই পেয়ারার গাছ থেকে গ্রীস্মের শুরুতেই ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে থাই পেয়ারার বাজারে ভাল চাহিদা রয়েছে। আমাদের বাগান থেকে ইতিমধ্যেই পেয়ারা বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়িরা। পেয়ারগুলো বিষমুক্ত, স্বাস্থ্য সম্মত ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘একবার বাগান তৈরী করে অল্প পরিচর্যায় ৫-৭ বছর ভালো ফলন পাওয়া যায়। এতে সার ও কিটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। খরচ বাদে এ বছর আমাদের কোটি টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমি বাগানগুলো পরিদর্শন করছি। খুব ভালো ফলন হয়েছে এবং পেয়ারগুলো অত্যান্ত সুস্বাদু। ঝালকাঠিতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত থাই পেয়ারার বাগান রয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে আমরা তাদের সব সময় পরামর্শ প্রদান করেছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই