একদিকে লবণপানি, অন্যদিকে মিঠাপানি

  • পিরোজপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০১৮, ১০:১০ পিএম

পিরোজপুর : ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আয়তনের দেশ বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, প্রত্বতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাথ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত। দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে। যেমন বাংলার সুবেদার শাহ সুজার ছেলের নামানুসারে ‘পিরোজপুর’জেলা।

সুন্দরবনের কোলঘেঁষা কালীগঙ্গা, বলেশ্বর, দামোদর, সন্ধ্যা বিধৌত প্রাকৃতিক সবুজের লীলাভূমি পিরোজপুর জেলা। বৈচিত্র্যে ভরপুর পিরোজপুর জেলার একদিকে লবণপানি আর অন্যদিকে মিঠা পানির অবস্থান। ১৮৫৯ সালের ২৮ অক্টোবর পিরোজপুর মহকুমা স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৮৪ সালে জেলায় রূপান্তরিত হয়।

পিরোজপুরের নামকরণের একটি সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলাল উদ্দীন মোগল নিজেকে মোগল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবি করেছিলেন। তার মতে, আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার কাছে পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন বাংলার সুবেদার শাহ সুজা। আত্মগোপনের একপর্যায়ে নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পাড়ে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন তিনি। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয়। শাহ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকান রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্ত্রী ও এক শিশুপুত্র রেখে যান। পরবর্তী সময়ে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে পশ্চিমে এসে বর্তমান পিরোজপুরের পাশ্ববর্তী দামোদর নদীর মুখে আস্তানা তৈরি করেন। ওই শিশুর নাম ছিল ফিরোজ। তার নামানুসারে জেলার নাম হয় ‘ফিরোজপুর’। কালের বিবর্তনে ফিরোজপুরের নাম হয়ে যায় ‘পিরোজপুর’।

পিরোজপুরের দর্শনীয় স্থানের তালিকায় রয়েছে বলেশ্বর ব্রিজ, জিয়ানগর ব্রিজ, মঠবাড়িয়া বধ্যভূমি, সাপলেজা কুঠিবাড়ি ও মমিন মসজিদ, শামীম লজ, রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি ও শিব মন্দির, হুলারহাট নদী বন্দর, নাজিরপুরের ফ্লোটিং গার্ডেন ও প্রণব মঠ, নেছারাবাদের পেয়ারা বাগান, কাঠমহল, শর্ষিনার প্রখ্যাত পীর হজরত নেছার উদ্দিনের (র.) মাজার, পাড়েরটাহ মৎস্য বন্দর, কবি আহসান হাবিবের বাড়ি, পাড়েরহাট আবাসন প্রকল্প, শেরে বাংলার জš§স্থান (নানা বাড়ি), ডিসি পার্ক, সয়না চর, কদমতলা জর্জ হাইস্কুল, কুড়িয়ানা পেয়ারা বাজার, উপজেলা পরিষদের ফুলের বাগান, আটঘর আমড়া বাগান, চুঙ্গাপাশা ফরাজী সাহেবের মাজার, আজিম ফরাজীর মাজার, সারেংকাঠি পিকনিক স্পট, কুড়িয়ানা অনুক‚ল ঠাকুরের আশ্রম।

এছাড়া পিরোজপুরের গৌরবময় কুটির শিল্প হলো শহরের পাল সম্প্রদায়ের গড়া মূর্তি, কাউখালী উপজেলার শীতল পাটি ও স্বরূপকাঠী উপজেলার নারিকেলের ছোবড়া থেকে তৈরি পাপোস। তথ্য সূত্র: বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন

সোনালীনিউজ/এমটিআই