প্রান্তিক খামারিদের বিলুপ্ত করার চেষ্টা চলছে!

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম

ঢাকা: একজন নগন্য সংবাদকর্মী হিসাবে অনুভূতি হচ্ছে দেশের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমই কৃষক ও প্রান্তিক খামারিদের বিরুদ্ধেই কাজ করে।এক টিভির ডিম বাড়ার কারণ নিয়ে তিনদিনে! খেটে অনুসন্ধান!! রিপোর্ট ও সেই বিষয়ে টক আলোচনা দেখে সত্যি সত্যি পেট থেকে ঢেকুর উঠছে!

এসি রুমে বসে আসলে কৃষক, খামারির সমস্যা আপনারা বুঝতে পারবেন না। আপনারা চান না এদেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা কৃষক, খামারির হাতে থাকুক। সত্যি চান না।

দেশের প্রান্তিক খামারির সংখ্যা ৭৫ শতাংশ কমে গেছে! আর সেই স্থান দখল করেছে কর্পোরেট হাউজ নামের নীল চাষীরা। প্রান্তিক খামারিদের বিলুপ্ত করার চেষ্টা প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে।

কিছু বিদেশি কোম্পানীর হাত দিয়ে এ যাত্রা শুরু। খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। নিয়মবহির্ভূত ভাবে বা আইন অমান্য করে কিভাবে তারা কি কি করেছে! এ নিয়ে দেশের খামারিরা একটা সময় কত কত আন্দোলনও করেছে। কিছুই হয় নাই।তবুও খামারিদের দমিয়ে রাখা যায় নাই।

খামারি বিলুপ্তি শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের পর থেকেই। মুরগির খাবার তৈরির উপকরণগুলির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। প্রতিনিয়ত খাদ্যের দাম বাড়িয়ে।মুরগির খাদ্য তৈরিতে যতগুলি উপাদনের প্রয়োজন হয় তার কোনটিরই সক্ষমতা বাংলাদেশের নাই। এমনকি ভুট্টা পর্যন্ত আমদানী করতে হয়! 

মুরগির খাবার তৈরির অত্যাবশ্যকীয় যে যে উপাদান আমদানী করতে হয় তা সাধারণ খামারির হাতে নেই। আছে কতিপয় সিন্ডিকেটের হাতে।
সবকিছুই সিন্ডিকেট!
একদিনের বাচ্চা উৎপাদনকারীদের সমিতি আছে 
খাদ্য উৎপাদনকারীদের সমিতি আছে 
খাদ্যে তৈরির অত্যাবশ্যকীয় উপাদান আমদানী কারকদের সমিতি আছে
প্রতিদিনের ডিম ও মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেবার সমিতি আছে। 
আবার কর্পোরেট ডিম, মাংস উৎপাদনকারীদেরও সমিতি আছে।
উপরের সবাই এক রসুনের ছাতার মধ্যেই আছে। 

খামারিদের কিছুই নেই। তাদের পক্ষে না আছে সরকার। না আছে মিডিয়া। না আছে জনমত।
একজন খামারি তার উৎপাদিত ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে না! ঢাকার বড় বড় কয়েকটি বাজারে বসে থাকা সমিতি নামক সিন্ডিকেট যে দাম নির্ধারণ করে দেয় সেটিই তার দাম!
লস হলেও সে বলতে পারে না সে ডিম বিক্রি করবে না!
ভাবা যায় কতোটা অমানবিক বিষয়টা!
আবার খাদ্যের দাম বাড়লো কেন?  কিনবো না আজ। এটুকো বলার সাধ্যও তাদের নাই! মানুষ না খেয়ে একদিন এক রাত থাকতে পারে। কিন্তু মুরগি বাঁচে না। তাদের চিক্কারে আকাশ ভারি হয়ে উঠে।
এখানেও নেই সরকার, মিডিয়া, জনমত।

আপনি কি জানেন ডিমের সামান্য দাম বাড়াতেই খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে? একদিনের বাচ্চা ১৫ টাকা থেকে লাফ দিয়ে ৪০ টাকা করে দিয়েছে? এই যে খাদ্যের দাম বাড়লো, এই যে বাচ্চার দাম বাড়লো তাতে করেছেন রিপোর্ট?

সাংবাদিক ভাই ও জনমতগণ একটু চোখ খুলে দেখুন মূল কৃষি থেকে সরে সবাই এখন ফল চাষ, সবজি, পুকুর করছে, ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছে!

আমদানী করে কখনোই দেশের খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না। বুদ্ধিমানদেশরা খাদ্য উৎপাদন ও কৃষক শ্রেণীকেই এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

যাইহোক গ্রামের কৃষক খামারিরা টিকে না থাকলে তো আপনাদের সমস্যা নাই। যাতে টিকে না থাকে সেই পথেই হাঁটুন। সব কর্পোরেট, বেনিয়াদের হাতে তুলে দিন।

কোন সমস্যা নেই। ভবিষ্যৎ বলা ঠিক না তবুও আন্দাজের কথা বলি আজ যে ডিম ১৫ টাকায় কিনে খেতে হিমশিম খাচ্ছেন সেই ডিমই কর্পোরেটদের হাত থেকে কিনে খাবে ২০ থেকে ২৫ টাকা পিসে! ব্রয়লার কেজি খাবেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। 

দশ টাকার বিস্কিট ২০ টাকায় খাচ্ছেন, পাঁচ টাকার চা ৮ টাকায় খাচ্ছেন, প্রতি বছর বাড়তি দামে সিগারেট খাচ্ছেন, তেল, সাবান, ওষুধ সবই ডাবলের কাছাকাছি দামে কিনছেন। একটা টু শব্দও করতে পারেন? পারবেন না। 

সেই সক্ষমতা রাষ্ট্রযন্ত্রের যেখানে নাই সেখানে আপনে কোন বাইতা গাছ! 
ও শেষ কথা কৃষক খামারিরা দুর্বল বলে লস কেবল তারাই দিবে? তারাই কেবল দেউলিয়া হবে? সব দেউলিয়া হয়ে গেলে তখন কি উপায় হবে? কিছু না হলেও দীর্ঘ নিশ্বাসের অভিশাপ তো আছে না'কি?

ফেসবুক থেকে নেয়া।

সোনালীনিউজ/আইএ