‘ইডেনের ছাত্রীর বিয়ে ভাঙার উপক্রম’

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০৯:২১ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: সম্প্রতি ইডেন কলেজে ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগের দুই পক্ষের কাণ্ডে দেশব্যাপী বইছে সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত তাদের সংঘর্ষের ভিডিও নিয়ে সবাই সরব। এবার ইডেনের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। 

তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, 'ইডেন কলেজ নিয়ে যে অভিযোগ শুনলাম খোদ ছাত্রলীগের কর্মী-নেত্রীদের কাছে, তাতে তব্দা খাইয়া গেলাম। 

আমরা আছি কই? 
যেনো কোথাও কেউ নাই কিছু বলার!!!  

এটা যদি সত্য হয় এর চেয়ে বড় অরগানাইজড ক্রাইম, সেক্স অফেন্সের কথা আমি শুনি নাই। সরকারের উচিত কেবল ছাত্রলীগের অভিযুক্ত নেতাদের শাস্তি দেয়া না, অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে প্রশাসনের সাথে জড়িত সবাইকে সাসপেন্ড করা। একই সাথে একটা নিরপেক্ষ কমিশন দিয়ে পুরা ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তি দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সব ছাত্রীহল কিভাবে চলবে তার নীতিমালা ঠিক করা! 

বাবা-মা তার সন্তানদেরকে পড়তে পাঠায় এই বিভীষিকার ভিতর দিয়ে যাওয়ার জন্য না নিশ্চয়ই।'

এদিকে পোস্টটি করার কয়েকঘন্টা পর সেটি মুছে দেন ফারুকি। অন্যএক পোস্টে তিনি লেখেন-গতকাল ইডেন কলেজ নিয়ে পোস্ট দেয়ার কয়েক ঘন্টা পর আমি সেটা মুছে দেই। আপনারা জানেন সোশ্যাল মিডিয়া খুব তাৎক্ষণিক একটা মাধ্যম। এখানে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া থাকে বেশী। কিন্তু আজকে একদিন চিন্তা করার পর আমি এই বিষয়ে আরেকটু গুছিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি। কারন এটা খুবই সিরিয়াস একটা বিষয়।
 
‘আমার পোস্ট মুছে দেয়ার কারন ছিলো কয়েকজন অভিভাবকের চিঠি। তারা লিখেছেন এই অভিযোগ আসার ফলে ঢালাওভাবে সবার প্রতি আঙ্গুল তুলছে সবাই। এতে বাবা-মা হিসাবে তারা খুবই বিব্রত। একজন তাঁর মেয়ের বিয়ে সম্পর্কিত আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে জানিয়েছেন। এই চিঠি পড়ার পর আমি সত্যিই একটু নড়ে উঠি। পরিবারের এই উদ্বেগ কিন্তু বাস্তব। আমি তারে পারি না এড়াতে।’ 

সুতরাং একটা কথা পরিষ্কার করা দরকার- ফোর্সড সেক্স বা সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশনের যে অভিযোগ আসছে সেটা তদন্ত হওয়া উচিত। এবং এই অভিযোগটা আসছে সরাসরি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর কাছ থেকে যেটা বেশ কিছু সাধারন ছাত্রীও সমর্থন করেছেন। কথা হলো যদি তিরিশ হাজার ছাত্রীর মধ্যে বিশজনও এর শিকার হয় সেটা এক জঘন্যতম অরগানাইজড ক্রাইম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ভয়াবহ অপরাধ চলতে পারেনা। তাই তদন্ত করে যদি অভিযোগ সত্য প্রমান হয়, এর সাথে জড়িতদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। একই সাথে কলেজ প্রশাসনকেও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে কিভাবে হলগুলাকে এইসব অনাচার মুক্ত করা যায়, সেটার উপরও কাজ করতে হবে। 

পাশাপাশি এটাও বলা দরকার, এটা তিরিশ হাজার ছাত্রীর বাস্তবতা না। ফলে ঢালাওভাবে মেয়েদের হোস্টেলে এই-ই ঘটে জাতীয় সরলীকরণ বা ফ্যান্টাসিকে যেনো প্রশ্রয় না দেই আমরা। ধন্যবাদ।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ফেসবুক থেকে।

উল্লেখ্য, জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক নেত্রীকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কারের দাবিতে গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বিক্ষোভ করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অন্যপক্ষের নেতাকর্মীরা। তারপর সংবাদ সম্মেলনে দুই পক্ষের হাতাহাতি, সংঘর্ষ দেখে দেশবাসী। এসবের মধ্যে উঠে এসেছে ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের নানা অপকর্মের কথা। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, আসন–বাণিজ্য ও ছাত্রীদের দিয়ে জোর করে অনৈতিক কাজ করানোর যেসব কানাঘুষা ছিল, তা এবার প্রকাশ্যে এসেছে ছাত্রসংগঠনটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। ছাত্রলীগের বড় অংশ বলছে, তাদের নেত্রীরাই এসব অপরাধে জড়িত।

এ পর্যন্ত ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রীদের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ হলো, সাধারণ ছাত্রীদের আপত্তিকর ছবি তুলে রেখে তাদের অনৈতিক কাজ অথবা আসন ছাড়তে বাধ্য করা। কখনো কখনো আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকাও আদায় করা হয়।

সোনালীনিউজ/আইএ