বগুড়ার অপু থেকে অবন্তি, অতঃপর...

  • ফেসবুক থেকে ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০১৭, ০৭:৫৫ পিএম

ঢাকা: ঢাকাই ছবির সুপারস্টার শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসকে নিয়ে গোটা দেশে এখন ঝড় বইছে। দুই সুপারস্টার জুটির প্রেম, বিয়ে, আট বছরের সংসার জীবন, সন্তান জন্মদান- সবকিছু নিয়ে হঠাৎ বোমা ফাটিয়েছেন অপু বিশ্বাস। এ নিয়ে নিউজমিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঝড় উঠেছে।

গেল সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে এক বেসরকারি টিভি লাইভে অপুর বোমার বিস্ফোরণের পর থেকেই ফেসবুকে চলছে তোলপাড়।

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের জন্ম বগুড়া শহরে। খুব সাধারণ অথচ সাংস্কৃতি সচেতন পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। পড়ালেখা করেছেন সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। নাচ করতেন শহরের আমরা ‘কজন শিল্পীগোষ্ঠী’তে।

একজন অতি সাধারণ মেয়ে অপু বিশ্বাসের অসাধারণ হয়ে ওঠে নিয়ে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বগুড়ার সিনিয়র সাংবাদিক মহসীন রাজু। তার পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো- 

অপু থেকে অবন্তি
অবশেষে
অপু ইসলাম খান

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে: ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিবের সিনেমার পর্দা ও বাস্তব জীবনের সঙ্গীনী বগুড়ার এক দরিদ্র কিন্তু সংস্কৃতি সচেতন পরিবারের মেয়ে অপু বিশ্বাসের উত্থানও সিনেমার মতই চমকপ্রদ বলে জানিয়েছেন তার পরিচিত জনরা। অনেকেই বলেছেন, বগুড়ার যে কালচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে চলচ্চিত্রে তার বিস্ময়কর উথানের সুযোগ তৈরি হয়; সাফল্যের চূড়ায় ওঠার পর ব্যস্ততার কারণে পিছনের দিনগুলি মনে রাখেননি তিনি। তবে গতকাল মঙ্গলবার তার পরিচিতজনদের সবাই তার মঙ্গল কামনা করে বলেছেন- সিনেমার পর্দার মতই বাস্তবেও তাদের (শাকিব+অপু) জীবন যেন সুখময় হয়!

পলাশের সঙ্গে বগুড়ায় নৃত্যে অপু

বগুড়ার কালচারাল অঙ্গনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপু ১৯৯৭-৯৮ এর দিকে বগুড়ার “আমরা ক’জন শিল্পীগোষ্ঠী” এর সদস্য হোন তার মামার হাত ধরে। বগুড়ার আলোর মেলা ও পরে ইয়াকুবিয়া স্কুলের কিশোরী ছাত্রী হিসেবে দ্রুতই সংগঠনটির নৃত্যকলা, আবৃত্তি ও অভিনয় শাখার অপরিহার্য চরিত্রের স্থান দখল করে নেন।

বগুড়ার নৃত্যগুরু ‘আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠী’র প্রতিষ্ঠাতা আব্দুস সামাদ পলাশের স্নেহধন্য শিষ্য হিসেবে অপু সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পরিচিত হয়ে ওঠেন। মা জোছনা বিশ্বাসের প্রেরণায় পরে রাজধানী ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হবার সংকল্পে বলিয়ান হয়ে ওঠেন। আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠীর সূত্র ধরে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সত্ত্বাধিকারী ফরিদুর রেজা সাগর ও চলচ্চিত্র পরিচালক সুভাষ দত্তের সঙ্গে পরিচিতি গড়ে ওঠে অপুর। বগুড়ার মেয়ে হিসেবে তাকে চলচ্চিত্রে ব্রেক দেন সুভাষ দত্ত। সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ও ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় “ও আমার ছেলে”’ এবং আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘কাল সকাল’ নামে দুটি চলচ্চিত্রে অপু বিশ্বাস ‘অপু অবন্তী’ নামে অভিনয় করেন। একই সময়ে কয়েকটি বিজ্ঞাপন চিত্রেও অভিনয় করেন।

২০০৪-২০০৫ সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকার সিনেমা জগতে ক্রমশ পরিচিত হয়ে ওঠেন অপু বিশ্বাস। তবে শাকিব খানের বিপরীতে “কোটি টাকার কাবিন” নামের সিনেমাটি ব্যবসা সফল হয় ও তাকে তারকা খ্যাতি এনে দেয়। এরপর থেকে শাকিবের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কারণে শাকিব খান তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অপু বিশ্বাসকেই কাস্ট করার কথা বলে দিতেন পরিচালকদের। এমন কথা শোনা যায়। তবে শাকিবের পাশাপাশি নিজের তারকা খ্যাতির পর অপু বগুড়ায় খুব একটা ফিরে তাকাননি

এই অপু সেই অপু

২০১০ সালে অপু একবার বগুড়ায় আসেন শাকিব খানকে নিয়ে। ওই সময় দত্তবাড়ির পূজামণ্ডপও পরিদর্শন করেন। ‘আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠি’তে তার নৃত্যগুরু আব্দুস সামাদ পলাশ ও অন্যদের সঙ্গে দেখা করে সংগঠনের একটা কল্যাণ ফান্ড গঠনেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন অপু। তাকেও সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় সংবর্ধনা। যদিও পরে ব্যস্ততার কারণে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে পারেননি অপু। এমন কথা জানিয়ে নৃত্যগুরু আব্দুস সামাদ পলাশ বলেন, ‘না গুরু হিসেবে কোনো আক্ষেপ নেই তার... অন্য সবার মত তিনিও চান অপুর যেন সংসার ক্যারিয়ার সবকিছু ঠিক ঠাক চলে। যেন ভালো থাকে অপু থেকে অবন্তি বিশ্বাস ও শেষে অপু ইসলাম খান।”

সোনালীনিউজ/এন