মশা মারতে সত্যিই ‘কামান’ চালালো এই নারী!

  • ফেসবুক থেকে ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০১৮, ০৯:৫৯ এএম

ঢাকা: সম্প্রতি মশা নিধনের জন্য বিশেষ কর্মসূচি শুরু করেছে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। নগরীর মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে থাকলেও মাঠ পর্যায়ে তা তদারকের দায়িত্ব দেয়া হয় কাউন্সিলরদের।

তারই ধারাবাহিকতায় চালু করা হয়েছে হটলাইন। মশার যন্ত্রণায় পড়লে তাতে ফোন করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওষুধ ছিটিয়ে দেবে সিটি করপোরেশন।

এমন অবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সংরক্ষিত ওয়ার্ডের একজন কমিশনারের কার্যক্রম নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র সদস্য আলেয়া সারোয়ার ডেইজী নামের এই জনপ্রতিনিধির মশা নিধন কার্যক্রমের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে ওই নারী কাউন্সিলরকে নগরীর এয়ারপোর্ট এলাকায় মশার ওষুধ ছেটাতে দেখা যাচ্ছে, তবে একটু ভিন্ন কায়দায়। কালো সানগ্লাস পরে তিনি গাড়ির উপর দাড়িয়ে আছেন আর তার পাশে দুই জন কর্মী মশা মারার ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করছেন। এটি আবার ভিডিও করছেন নারী কমিশনার নিজেই।

সোমবার ডিএনসিসির ফেসবুক পেজ থেকে এমন একটি ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, প্যানেল মেয়র সদস্য আলেয়া সারোয়ার ডেইজীর নেতৃত্বে এয়ারপোর্ট এলাকায় মশা নিধনের ঔষধ ছিটানো হচ্ছে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আলোচনার ঝড় উঠে। বেশিরভাগ লোকই করেছেন সমালোচনা।

মনির মিল্লাত নামে একজন দু'টি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মশারা ভয় পাক বা না পাক, অ্যাকশন দেখে আমি ভয় পাইছি। যেন সিরিয়ায় আইএস বিরোধী লড়াই চলছে। ওপাড় থেকে মশা মারার এই দৃশ্য দেখে, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকও হয়তো লজ্জিত, বিব্রত!!!’

আমিন দিদার নামে একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘ভালই তু মশাও মরতেছে বিনোদনও দিতেছে।’

রেজা আল মুতাইরি নামে একজনের প্রশ্ন, ‘ভাই কোন ছবির শুটিং?’ ইমদাদুল হক লিখেছেন, আগে শুনছিলাম মশা মারতে কামান দাগে, এইটারে কি কমু?’

কারো কারো মতে, এভাবে মশা নিধন সম্ভব নয় বরং এটি সরকারি টাকার অপচয় এবং পরিবেশ দূষণ।

হাসান আসিফ জামান নামে একজন লিখেছেন, মশা থাকে নর্দমায় ড্রেনে আর উনি খোলা রাস্তায় মশা মারে ..... এগুলো লোক দেখানো মশা মারার ফ্যাশন শো।

তবে কেবল সমালোচনা নয়, অনেকেই আলেয়া সারোয়ার ডেইজীর এই কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে সমালোচনা করে মন্তব্যকারীদের সমালোচনা করে অশান্ত শব্দ নামের আইডি থেকে লিখেছেন, ভাইয়ারা হয়তো এ্যাকশনটা ভালো ছিলো না তাদের। একবার ব্যাপার টা নিয়ে প্রপার চিন্তা করেন, এটা বিশ্বের উন্নত সবগুলো দেশে যুগ যুগ ধরে চলতেছে, জীবনে চোখের সামনে ভালো কিছু দেখেন না তো তাই বাজে বাজে কমেন্ট করতেছেন।

অপর একজন লিখেছেন, দুই বছর যাবৎ বিদেশে থাকি এই ২ বছরে দুইটা মশা মারছি কিনা নিজের হাতে সন্দেহ আছে একমাত্র এরকম যোদ্ধাদের জন্য।

শরিফুল ইসলাম হিরান লিখেছেন, হায়রে পাবলিক, উপকার করলেও খারাপ না করলেও খারাপ। এখানে একশনের কি দেখলেন। বরং আমার কাছে তো ভালই লাগল। এমন ড্যাম কেয়ার টাইপের পাগলাটে মানুষগুলাই দরকার। এদের দিয়েই কিছু একটা হবার আশা থাকে। আপনাদের মত রক্ষণশীল টাইপের আধবুড়ো দিয়ে কিছুই হয় না।

শো অফ হোক আর যাই হোক, উপকার হচ্ছে এতেই খুশী।

মশা নিধনের জন্য ডিএনসিসি গত দুই অর্থবছরে ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এবার বরাদ্দ ২০ কোটি টাকা এবং ডিএসসিসির গত দুই অর্থবছরে খরচ ২৭ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এবার বরাদ্দ ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

মশা নিয়ন্ত্রণে দুভাবে কীটনাশক ছিটানো হয়। মশার লার্ভা মারতে সকালে তরল ওষুধ এবং উড়ন্ত মশা মারতে বিকেলে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হয়।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন