তামাকবিরোধীদের আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০১৬, ০৩:৫৫ পিএম

সোনালীনিউজ ডেস্ক

ছবিযুক্ত সতর্কবাণী বিড়ি-সিগারেটের প্যাকেটের উপরের অর্ধাংশের পরিবর্তে নিচের অর্ধাংশে মুদ্রণে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত দেওয়ায় খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন।

সোমবার তামাকবিরোধী ১২টি সংগঠনের পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিষয়টিকে তামাক কোম্পানির সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘সখ্য ভাব’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

এতে বলা হয়, “সরকারের গেজেট দ্বারা প্রকাশিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশের জনস্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করে তামাক কোম্পানির দাবি অনুযায়ী তামাক পণ্যের প্যাকেটের নিচের অংশের ৫০ শতাংশ জায়গায় ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী।”

এ সংক্রান্ত ফাইলে আইনমন্ত্রী রোববার সকালে স্বাক্ষর করে ব্যক্তিগত সফরে বিদেশ গিয়েছেন বলে একটি দৈনিক সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের সময়সীমা ১৯ মার্চ শেষ হওয়ার পরদিন ২০ মার্চ আইনমন্ত্রী দেশে ফিরবেন দাবি করে এতে বলা হয়, “বিষয়টি নিয়ে কথা না বলার জন্যই তার এই বিদেশ সফর।”

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা, সীমান্তিক, উবিনীগ, ইসি বাংলাদেশ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব, প্রত্যাশা, এইড ফাউন্ডেশন ও প্রজ্ঞা নামের ১২টি তামাকবিরোধী সংগঠন এই বিবৃতি পাঠায়।

তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বিধিমালা অনুযায়ী মোড়কের উপরের ৫০ শতাংশে সতর্কবাণী বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার থেকে তিন দিনব্যাপী রোড শো শুরু করেছে তারা।

আগামী বুধবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই কর্মসূচি। বিশ্বের অন্তত ৮০টি দেশে তামাকজাত দ্রব্য ও সিগারেটের প্যাকেটে ধূমপানের ফলে মানবদেহের কী কী ক্ষতি হতে পারে, সে সম্বলিত ছবি দেওয়া সতর্কবাণী মুদ্রণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশে বাজারজাত করা তামাক কোম্পানিগুলোকেও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী প্যাকেটের গায়ে এই ছবিযুক্ত সতর্কবাণী মুদ্রণে এক বছর সময় বেঁধে দেয় সরকার, যা আগামী ১৯ মার্চ শেষ হচ্ছে।

এই ছবিযুক্ত সতর্কবাণী সিগারেটের প্যাকেটের দুই পাশের উপরের অর্ধাংশে মুদ্রণের কথা বলা হলেও সিগারেট কোম্পানিগুলো নিচের অর্ধাংশে তা মুদ্রণে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, “আইন বাস্তবায়নের শেষ সময়ে এসে তামাক কোম্পানিগুলো মরিয়া হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে স্টাম্প এবং ব্যান্ডরোল লাগানোর নির্দেশনা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ১০ নম্বর ধারার সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় তারা এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চায়।

“তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও এর বিধি অনুযায়ী সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী তামাকপণ্যের প্যাকেটের উভয় পার্শ্বে উপরিভাগের ৫০ শতাংশে এমনভাবে মুদ্রণ করতে হবে যাতে তা স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল দ্বারা ঢেকে না যায়।” এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠায়।
“এ বিষয়ে প্যাকেটের নিচের অর্ধাংশে সতর্কবাণী মুদ্রণে মতামত দেন আইনমন্ত্রী, যা কার্যত সিগারেট কোম্পানিগুলোর পক্ষেই যায়।”

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন