আর কখনো দেখবে না কাশ্মীরি কিশোরী

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৬, ০৩:১৪ পিএম

বাড়িতে বসেছিল ১৪ বছরের কাশ্মীরি কিশোরী ইনশা মোশতাক। হঠাৎ করেই চোখে লাগলো ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া ছররা গুলি। মুহুর্তেই অন্ধকার নেমে এলো দু'চোখে।

এরপর মেয়ের চোখের দৃষ্টি ফেরাতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়িয়েছেন তার মা-বাবা। পরপর তিনটি অপারেশনও হয়েছে।

কিন্তু ছররা গুলিবিদ্ধ ইনশার চোখ সারাতে পারেননি চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার আর সম্ভাবনা নেই।

কিশোরী মেয়ের অকালে দৃষ্টি হারানোর ঘটনা মানতে পারছেন না তার বাবা মোশতাক আহমেদ লোন। তাই নিজের চোখ দিয়ে মেয়ের দৃষ্টি ফেরাতে চান। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন এমন সুযোগও নাই।

অনেকের মতোই ছররা গুলির শিকার ইনশা। সে দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার বাসিন্দা। জুলাই মাসে তার জীবনে দুর্যোগ নেমে আসে।

দিনটি ছিল ২৩ জুলাই। বাড়িতেই ছিল ইনশা। এসময় পুলিশে ছোড়া ছররা গুলি এসে লাগে ইনশার চোখে, কপালে ও মুখে। তারপর হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দিন কাটে তার বাবা-মায়ের।

পরে ছররা গুলিবিদ্ধ আরও তিন জনের সঙ্গে দিল্লির এইমস হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় ইনশাকে। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, দুই চোখ আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মস্তিষ্কেও সংক্রমণ হয়েছে।

পরে চোখের চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ের আদিত্য জ্যোত হাসপাতালে নেওয়া হয় ইনশাকে।

মঙ্গলবার এ হাসপাতালে তিন ঘণ্টা ধরে ইনশার চোখের অপারেশন করা হয়। এ সময় অপারেশন থিয়েটারের বাইরে বড় আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন বাবা মোশতাক আহমেদ লোন।

কিন্তু তৃতীয় বারের এ অপারেশনেও বিশেষ লাভ হয়নি বলেই জানান ইনশার চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসক এস নটরাজন।

নটারাজন জানান, ছররাগুলির আঘাতে কিশোরী ইনশার দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার বাঁ চোখের রেটিনার অর্ধেক অংশ কুঁচকে গিয়ে একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। আর বাকি অংশে রক্ত জমে রয়েছে। ফলে দৃষ্টি ফেরার আশা নেই বললেই চলে।

তবে বাবা মোশতাক নাছোড়। চিকিৎসকদের কাছে তার কাতর আকুতি- আমার চোখ দিয়ে কি মেয়ের চোখের আলো ফেরানো যায় না! চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এমনটিও সম্ভব নয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ