নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যৎবাণী

২০১৬ সালেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৬, ০৩:৩৮ পিএম

ঢাকা: ষোড়শ শতকের ফরাসি পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিদ মাইকেল দে নোতর দাম ওরফে নস্ত্রাদামুস বিখ্যাত হয়ে আছেন তার ভবিষ্যৎবাণীর জন্য। পাঁচশ বছর আগে আশ্চর্য সব ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। যা পরবর্তীতের সত্যে পরিণত হয়েছে।

‘দি প্রফেসিস’ এই ইংরেজি নামের বইটিতে রহস্যময় ভাষায় তিনি এসব কথা লিখে গেছেন। ১৯৩০-এর দশকে হিটলারের উত্থান, আমেরিকার কেনেডি-ভাইদের নিহত হওয়ার ঘটনা, নেপোলিয়নের পরাজয়, এমনকী ৯/১১-এ আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী হামলা— এ সবই বলে গিয়েছিলেন।

সম্প্রতি উরি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম অশান্তি তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে যুদ্ধের আবহ। পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিতে যুদ্ধেই সায় দিচ্ছে দেশের মানুষও। ভারতকে সমর্থন করছে আমেরিকা। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যখন অশান্তি চরমে পৌঁছেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে নস্ত্রাদামুসের দেয়া ২০১৬ সাল বা এর আশপাশ সময়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভবিষ্যৎবাণী সবাইকে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে।

২০১৬ সাল ও এর আশপাশের সময়ে কী ঘটতে চলেছে, সে সম্পর্কে কী বলে গিয়েছিলেন নস্ত্রাদামুস- তা নিচে ক্রমানুসারে উল্লেখ করা হলো-

১. তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: ২০১৬ সালেই পৃথিবীর বৃহৎ রাষ্ট্রশক্তিগুলির মধ্যে এক ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হবে। যা দীর্ঘ ২৭ বছর স্থায়ী হবে এবং বিপুল প্রাণহানির কারণ হবে। অনেকেই মনে করেন, নস্ত্রাদামুস ইঙ্গিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথাই বলে গিয়েছিলেন।

২. ভিস্যুভিয়াস থেকে অগ্নুৎপাত: আগ্নেয়গিরি ভিস্যুভিয়াস থেকে ব্যাপক অগ্নুৎপাত ঘটবে। তার ঠিক পরে-পরেই প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠবে পৃথিবী, যে ভূমিকম্পে ৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যু‌ হবে।

৩. ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম ভূমিকম্প: ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম ভূমিকম্পটি দেখা দেবে ২০১৬ সালেই। এটির উৎপত্তিস্থল হবে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চল। কিন্তু এর ব্যাপকতা গোটা পৃথিবীকেই কাঁপিয়ে দেবে।

৪. সন্তান ধারণের অনুমতি: নস্ত্রাদামুসের গণনা অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই বছরেই এমন আইন চালু হবে, যে আইন অনুসারে সন্তানের পিতা-মাতা হওয়ার আগে সরকারি অনুমতি নিতে হবে দম্পতিদের।

৫. বিশ্ব-অর্থনীতির বিপর্যয়: বিশ্ব-অর্থনীতি এই বছর নাগাদই ভেঙে পড়বে। নস্ত্রাদামুস রহস্যময় ভাষায় এই ইঙ্গিত দিয়ে লিখেছেন, ‘ধনীরা তাদের জীবদ্দশায় বহুবার মৃত্যুর সম্মুখীন হবে।’

৬. মানুষের দৈহিক বয়স কমে যাবে: নস্ত্রাদামুসের মতে, এই সময় চিকিৎসাবিদ্যার এমন উন্নতি হবে যে, ৮০ বছর বয়স্ক মানুষকে দেখতে লাগবে ৫০ বছর বয়সীর মতো। সেই সঙ্গে মানুষের আয়ু ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

৭. প্রকৃতির সর্বনাশ: নস্ত্রাদামুস লিখে গিয়েছেন, ২০১৬ সাল নাগাদ ‘রাজারা অরণ্যকে হরণ করবে, আকাশ ফেটে যাবে, উত্তাপে দগ্ধ হবে মাটি।’ যার সহজ অর্থ— বসতির প্রয়োজনে প্রাকৃতিক অরণ্যকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রের মাথারা। বায়ুমণ্ডলের ওজন স্তরে ছিদ্র দেখা দেবে, যার ফলে সূর্যের অতিবেগুণী রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে ক্ষয়-ক্ষতি ঘটাবে জীবকুলের।

৮. করদান থেকে মুক্তি: নস্ত্রাদামুস লিখেছেন, ‘মানুষ রাজাকে কর দান করতে অস্বীকার করবে।’ অর্থাৎ কোনো এক ব্যাপক গণবিপ্লবের পরিণামে কর ব্যবস্থারই অবলোপন ঘটবে।

৯. পশুপাখির সঙ্গে মানুষের সখ্য: নস্ত্রাদামুস লিখে গিয়েছেন, ‘শুয়োরেরা মানুষের ভাই হয়ে উঠবে।’ এর অর্থ কী, মানুষ পশুসুলভ বর্বর হয়ে উঠবে, নাকি পশুকুলের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যের সম্পর্ক স্থাপিত হবে মানুষের? বর্তমান পৃথিবীতে প্রথম ঘটনাটিই যেন বেশি সম্ভব বলে মনে হয়।

১০. ভাষার ব্যবধান দূরীভূত হবে: নস্ত্রাদামুস বলে গিয়েছেন, কোনো এক বিশেষ যন্ত্রের কল্যাণে ভাষায়-ভাষায় দূরত্ব ঘুচে যাবে। অনেকেই মনে করেন, এই বিশেষ যন্ত্রটি আসলে কম্পিউটার।

ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি: ভারত আর পকিস্তান দুটিই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। কারো চেয়ে কেউ কম যায় না। উরি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে যুদ্ধের আবহ। ভূ-রাজনীতির দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, পাকিস্তানের পাশেই রয়েছে চিন। কাঁটাতারের দু’পারেই চলছে ব্যাপক যুদ্ধ মহড়া। বারবার ভারতকে পরমাণু হামলার হুমকিও দিচ্ছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গি শিবিরে অভিযান চালিয়ে এসেছে ভারতীয় সেনা। এখানেই শেষ নয়, ভারতের এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরেও ফের কাশ্মীরে জঙ্গি-ক্যাম্পে হামলা চলেছে। এইসব কিছু কি তবে আসলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে? প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যাচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই