ঢাকা: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি আজ ১ আগস্ট শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে। মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এই নতুন শুল্কহার কার্যকরের সময়সীমা এর আগে দুই দফায় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল—প্রথমে ২ এপ্রিল, পরে ৯ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত। ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার দিনটিকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে।
টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ২০০টিরও বেশি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করেছেন। তবে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা যায়, গত ১২০ দিনে মাত্র ৮টি দেশ—যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, জাপান, ইইউ, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। চীনের সঙ্গে চুক্তিটি এখনো অন্তর্বর্তী পর্যায়ে রয়েছে।
[253764]
কোন দেশে কী সিদ্ধান্ত:
যুক্তরাজ্য: ১০% ভিত্তি শুল্ক। ইস্পাত ও ডিজিটাল কর ইস্যুতে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি।
ভিয়েতনাম: শুল্ক ৪৬% থেকে কমে ২০%, তবে চীনা পণ্য ঠেকাতে অতিরিক্ত শুল্ক থাকছে।
ইন্দোনেশিয়া: ৩২% থেকে শুল্ক কমে ১৯%। ৯৯% মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক তুলে নেওয়ার ঘোষণা।
ফিলিপাইন: সামান্য হ্রাস—২০% থেকে ১৯%। মার্কিন পণ্যে কোনো শুল্ক আরোপ করবে না।
জাপান: ২৫% থেকে শুল্ক কমে ১৫%, গাড়ি ও চাল খাতে বড় ছাড়।
ইইউ: ৩০% থেকে কমে ১৫%। ফ্রান্স চুক্তিকে ‘আত্মসমর্পণ’ বললেও ইইউ কমিশন একে ‘বাস্তববাদী সমাধান’ বলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া: ১৫% শুল্ক। বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
চীন: এখনো অন্তর্বর্তী চুক্তির আওতায়। বর্তমান শুল্ক হার: চীনের ওপর ৩০%, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%।
বাকি দেশগুলোর অবস্থা:
ভারত: ২৫% শুল্ক আরোপ, সঙ্গে ‘শাস্তিমূলক কর’ আরোপের হুমকি।
কানাডা: ৩৫% শুল্ক কার্যকর। আলোচনার পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ পর্যায়ে।
মেক্সিকো: ৩০% শুল্ক বহাল; সীমান্ত নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে শুল্ক আরও বাড়তে পারে।
অস্ট্রেলিয়া: আপাতত ১০% শুল্ক। ভবিষ্যতে ১৫-২০% হতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে ২২টি দেশকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ১ আগস্ট থেকে তাদের ওপর নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে। এই তালিকায় **বাংলাদেশ**-ও রয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, সময়সীমা পেছানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
বিশ্লেষক মত: বিশ্ব অর্থনীতি এমনিতেই ধীরগতির দিকে এগোচ্ছে। এর মধ্যে মার্কিন শুল্কনীতির হঠাৎ পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা বাড়াতে পারে।
সূত্র: এনবিসি, বিবিসি, টাইম
ওএফ