ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (১৮ আগস্ট) বৈঠকে বসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে। চলতি বছরের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউসে দুই নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার পর এটাই তাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। তবে এবার জেলেনস্কির সঙ্গে থাকছেন ইউরোপীয় মিত্র নেতারাও। খবর: বিবিসি বাংলা
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারসহ আরও কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা ওয়াশিংটনে যোগ দেবেন ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে।
এর আগে শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে শান্তি চুক্তির চেষ্টা হলেও কোনো যুদ্ধবিরতি বা বড় ধরনের অগ্রগতি হয়নি। সেই বৈঠকের মাত্র তিন দিনের মাথায় হচ্ছে এই বৈঠক, যা কূটনৈতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইউরোপীয় নেতারা চান ইউক্রেনের অনুপস্থিতিতে যেন কোনো সিদ্ধান্ত বা চুক্তি না হয়। পাশাপাশি তারা জোর দিচ্ছেন—যে কোনো চুক্তিতে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
মার্কিন এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, পুতিন ইউক্রেনের জন্য ‘ন্যাটো-সদৃশ’ নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় সম্মত হয়েছেন। ট্রাম্পও সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছেন, “রাশিয়ার ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হয়েছে”, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সোমবারের বৈঠকে যোগ দিতে ওয়াশিংটনের পথে আছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন। এত অল্প সময়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে এতজন নেতার যুক্তরাষ্ট্রে উপস্থিতি নজিরবিহীন।
ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ট্রাম্প হয়তো জেলেনস্কিকে চাপ দিয়ে কিছু শর্তে রাজি করানোর চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনকে বাদ দেওয়ায় তাদের সন্দেহ বেড়েছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এটিকে “মিডিয়ার বানানো গল্প” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে। জেলেনস্কি বারবার স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী কোনো ভূখণ্ড ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়।
রোববার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলেনস্কি বলেন, “কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা যদি ইউক্রেনের ভূখণ্ড অক্ষুণ্ণ রাখে না, তবে তা গ্রহণযোগ্য নয়।” ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো জানান, তাদের লক্ষ্য সোমবারের বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ ইউরোপীয় অবস্থান তুলে ধরা।
অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, ইউরোপের গত ৮০ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ এই সংঘাত দ্রুত শেষ হবে—এমন আশা করা ঠিক নয়। তার ভাষায়, “আমাদের সামনে এখনো অনেক পথ বাকি।”
ওএফ