ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৯। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল সেবু দ্বীপের উত্তর প্রান্তে, বোগো শহরের নিকটবর্তী এলাকায়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে এ ভূমিকম্পটি সংঘটিত হয়। এরপর পরপর কয়েকটি আফটারশক অনুভূত হয়, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়।
সেবু ও আশপাশের শহরগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকায়, এবং বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। কিছু এলাকায় এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিভিল ডিফেন্স বিভাগের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো জানান, এখন পর্যন্ত ৬০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
চিকিৎসা সংকট ও উদ্ধার অভিযান
সেবু দ্বীপের হাসপাতালগুলোতে হঠাৎ করে আহত রোগীদের ভিড়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। অনেক হাসপাতালে জায়গা না থাকায় রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে। গুরুতর আহতদের অনেকে চিকিৎসা পাচ্ছেন হাসপাতালের বাইরেই।
স্থানীয় এক উদ্ধারকর্মী টেডি ফন্টিলাস বলেন, উপচে পড়া ভিড়ের কারণে আমরা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছি না। সবার জীবন বাঁচাতে দিন-রাত এক করে কাজ করছি।
সান রেমিজিও পৌরসভায় একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স ধসে পড়ার ঘটনায় অনেকে আটকা পড়েছেন বলে জানানো হয়েছে। রাতভর উদ্ধার অভিযান চললেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আফটারশকের কারণে তা ব্যাহত হয়েছে।
জরুরি অবস্থা ও সতর্কতা
সেবু ছাড়াও বোগো, সান রেমিজিওসহ আশপাশের বহু শহরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের পর প্রাথমিকভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি পরবর্তীতে জানায়, সমুদ্রপৃষ্ঠে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন না থাকায় সেই সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সেবুর প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জানান, “এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। জনগণকে সতর্ক ও সহনশীল থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
চলছে উদ্ধার, সামনে দীর্ঘ পথ
প্রাদেশিক উদ্ধার কর্মকর্তা উইলসন রামোস বলেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে কতজন আটকা পড়েছেন, তা এখনই বলা কঠিন। তবে রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়েও আমরা পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারিনি।
দেশটির সরকার ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে জরুরি সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র জানতে সময় লাগবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এম