দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি কার্যক্রম শুরু করেছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৮টার পর প্রথম ধাপে সাতজন জিম্মিকে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি)-এর প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো।
তবে মুক্তিপ্রাপ্তদের নাম ও পরিচয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, এবং এ বিষয়ে ইসরায়েলি সরকার কিংবা সামরিক বাহিনী থেকেও কোনো তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যুদ্ধবিরতির শর্তেই মুক্তি
গাজা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতির আওতায় এ জিম্মি মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় গত শুক্রবার, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনার’ অংশ হিসেবে।
এই পরিকল্পনার আওতায় গাজায় হামলা বন্ধ, সেনা প্রত্যাহার এবং জিম্মি ও বন্দিবিনিময় ছিল অন্যতম মূল শর্ত।
বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতিতে ‘শান্তি সম্মেলন’
এই শান্তি উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় সোমবারই মিসরের শারম আল শেখে শুরু হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন, যেখানে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা। ধারণা করা হচ্ছে, সম্মেলনে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করতে পারেন ট্রাম্প। এর আগে তিনি ইসরায়েল সফর করবেন এবং পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন বলে জানা গেছে।
বিনিময়ে মুক্তি পাবে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি
জিম্মি মুক্তির প্রতিদান হিসেবে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ১,৯৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে চুক্তিতে। তাদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, এবং অন্তত ২২ জন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই ঘটনায় প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলিকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায় তারা। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এখনো ৪৮ জন জিম্মি গাজায় আটক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত, বাকিদের মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি নজরে রাখছে আন্তর্জাতিক মহল
হামাসের এই জিম্মি মুক্তি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। তবে তারা একই সঙ্গে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের অবসান ও একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে।
প্রসঙ্গত: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ফলে গাজায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে অঞ্চলটিতে সাময়িক স্বস্তি ফিরলেও ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।
এম